অরূপ বসাক, মালবাজার: ডুর্য়াসে ছেলেধরা সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ঘটনায় সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এদিকে ধৃতদের মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার সকালে নাগরাকাটা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তাদের পরিবারের লোকেরা।
স্রেফ ডুয়ার্সেই নয়, গোটা উত্তরবঙ্গেই গত কয়েকদিন ধরে ছেলেধরা আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। আতঙ্ক এতটাই যে, সন্দেহের বশে অচেনা লোক দেখলেই গণপিটুনি দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ডুয়ার্সের নাগরাকাটায় স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে বেধড়ক মার খেয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক ভবঘুরে ব্যক্তি।
জানা গিয়েছে, গত বেশ কয়েক দিন ধরেই বহুরূপী সেজে নাগরাকাটার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন বছর পঁয়তাল্লিশের ওই ব্যক্তি। সকালে ভিক্ষা করতেন তিনি। আর রাতে যে এলাকায় পৌঁছাতেন, সেখানকারই কোনও স্কুলে আশ্রয় নিতেন। সোমবার সকালে ভিক্ষা করতে করতেই নাগরাকাটার সুখানি বসতি এলাকায় পৌঁছে যান ওই বহুরূপী। সাতসকালে এলাকায় অপরিচিত ব্যক্তিকে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয় বাসিন্দারা। সন্দেহের বশেই তাঁকে অনুসরণ করতে শুরু করেন সুখানি বসতির বাসিন্দারা। এদিকে ঘটনাটি বুঝতে পেরে ভয় পেয়ে যান ওই ব্যক্তি। পালাতে গিয়ে বসতি লাগোয়া রেললাইনে পড়ে যান তিনি। এরপরই তাঁর উপর চড়াও হয়ে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাথর দিয়ে বারবার মাথায় আঘাত করা হয়। মারের চোটে ঘটনাস্থলে মারা যান ওই ব্যক্তি। সোমবার রাতে নাগরাকাটার সুখানি বসতি থেকে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু অশান্তির আশঙ্কায় ধৃতদের নাগরাকাটায় থানায় রাখার ঝুঁকি নেয়নি পুলিশ। তাদের নিয়ে যাওয়া হয় ধূপগুড়ি থানায়। রাতে সেখানেই ছিল অভিযুক্তরা।
এদিকে ছেলেধরা গুজব আটকাতে মঙ্গলবার নাগরাকাটা বিডিও অফিসে সর্বদল বৈঠক করল প্রশাসন। বৈঠকে বিডিও ও স্থানীয় চা-বাগানের মালিকরাও হাজির ছিলেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যাঁরা চা-বাগানে চাকরি পাবেন, তাঁদের কাজে যোগ দেওয়ার আগে এই ছেলেধরা গুজব নিয়ে সচেতন করা হবে। প্রতিটি বুথ এলাকাতেও সচেতনতা অভিযান চালাবেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যেরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.