সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে জট কেটেছে। গ্রেপ্তার হয়েছে জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত উৎপল বেহরা। কিন্তু ঠিক কী হয়েছিল সেদিন? কোন আক্রোশে এই নৃশংস হত্যালীলা? কেনই বা রেহাই মিলল না শিশুটিরও? সাংবাদিক বৈঠকে গোটা ঘটনার বর্ণনা দিলেন মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার এস মুকেশ।
শেষ ৬ দিন জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের কিনারা করতে মুর্শিদাবাদ থেকে রামপুরহাট দফায় দফায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ ও সিআইডি। সন্দেহভাজন একাধিককে আটক করে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু কিছুতেই রহস্যভেদ করতে না। সাত দিনের মাথায় অবশেষে রহস্যের জট খুলল। বিছানায় পড়ে থাকা বিমার কাগজ থেকে তদন্তকারীদের কাছে স্পষ্ট হয়েছিল উৎপল বেহরা নামে এক ব্যক্তির উপস্থিতি। এরপর সন্দেহভাজনদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর স্পষ্ট আরও হয় ছবিটা। সোমবার রাতে তদন্তকারীরা নিশ্চিত হন যে, উৎপল বেহরাই খুনের সঙ্গে জড়িত। এরপর গভীর রাতেই গ্রেপ্তার করা হয় উৎপলকে। আটক করা হয়েছে তার বোনকেও।
অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর সংবাদিক বৈঠক করেন মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার এস মুকেশ। তিনি জানান, জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছে উৎপল। খুনের কারণ হিসেবে উঠেছে আর্থিক লেনদেনের বিষয়। জানা গিয়েছে, একাধিক বিমা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন নিহত শিক্ষক। উৎপলও তাঁর কাছে বিমার টাকা দেয়। কিন্তু রশিদ চাইতেই জানতে পারে জমাই পড়েনি সেই টাকা। অভিযোগ, এরপর সেই টাকা ফেরত চাইলে অভিযুক্তকে গালিগালাজ করেন নিহত শিক্ষক। এই ক্ষোভেই খুনের ছক কষতে শুরু করে উৎপল।
ধৃত জানিয়েছে, পরিকল্পনামাফিক নিহতের এলাকায় রেইকি করে সে। খুনের কয়েকদিন আগে সাহাপুর এলাকা থেকে ধারালো অস্ত্র কেনে উৎপল। পুজোর মধ্যেই সেটিকে বোনের বাড়িতে রেখেও আসে। এরপর দশমীর দিন সকালে বোনের বাড়ি থেকে অস্ত্র নিয়ে শিক্ষকের বাড়ির দিকে রওনা হয় সে। বন্ধুপ্রকাশ পালের সঙ্গে ফোনে কথা বলে তাঁর বাড়িতে হাজির হয়। টাকা চাইতেই ফের শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। এরপরই ধারালো অস্ত্র দিয়ে শিক্ষককে খুন করে উৎপল। সেই সময় অভিযুক্তকে দেখে ফেলেছিলেন শিক্ষকের ছেলে ও স্ত্রী। সেই কারণেই খুন করা হয় তাঁদেরও।
মাত্র ৫ মিনিটে ওই তিনজনকে খুন করেছিল উৎপল। এরপর যাতে ধরা না পড়ে, সেই কারণেই পোশাকও পালটে ফেলেছিল অভিযুক্ত। তারপর ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় সে। সেখান থেকে সোজা বোনের বাড়িতে চলে গিয়েছিল সে। কিন্তু এত সাবধানতা সত্ত্বেও শেষরক্ষা হল না। যদিও খুনের কথা অস্বীকার করেছে উৎপলের পরিবার। তাঁর মা-এর দাবি “তাঁদের ছেলে নির্দোষ”। ছেলেকে ফাঁসানো হচ্ছে বলেই অভিযোগ করছেন উৎপল বেহরার মা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.