সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: নর্দমা সাফাইয়ের সময় সাফাইকর্মীদের হাতে এল প্রাচীন তলোয়ার। শনিবার ওই তলোয়ার উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শিলিগুড়িতে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাদুঘর বিভাগ জানিয়েছে, তলোয়ারটি অন্তত এক থেকে দেড়শো বছরের পুরনো। কিন্তু কীভাবে তলোয়ারটি ওই এলাকায় এল সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাদুঘর কর্তৃপক্ষ কিছু বলতে পারেনি। জানা গিয়েছে, উদ্ধারের পর তলোয়ারটি শিলিগুড়ি থানার পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়িতে জমা রাখা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, তলোয়ারটির বাঁটের কাছে কবজি রক্ষাকারী প্রতিরোধক লাগানো রয়েছে। সেটি সম্ভবত পিতলের। তাতে সুচারু কারুকাজ করা রয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাদুঘর বিভাগের কার্যনির্বাহী নির্দেশক সুদাস লামার ধারণা, এটি সম্ভবত পাচার করার পথে কেউ ফেলে গিয়েছে। কারণ, এই ধরনের তলোয়ার রাজ্যের এই অংশে অর্থাৎ উত্তরবঙ্গ কিংবা নেপাল-ভুটান এলাকায় ব্যবহার হত না। আবার সন্ন্যাসী বিদ্রোহের সময় তলোয়ারটি দক্ষিণবঙ্গ থেকে এই এলাকায় আসতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, “দেবী চৌধুরানি কিংবা সন্ন্যাসী বিদ্রোহের সময় এটি এদিকে এসে থাকতে পারে। তবে এটি কোনওভাবেই স্থানীয় তলোয়ার নয় । কারণ, সেক্ষেত্রে মাটির নিচ থেকে এটি পাওয়ার সম্ভাবনা কম।”
শনিবার শিলিগুড়ি পুরনিগমের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি পুরনো বাড়ির নর্দমার পাশ থেকে তলোয়ারটি উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, এদিন ১২ নম্বর ওয়ার্ডের রাজা রামমোহন রায় রোড এলাকায় একটি বাড়ির নর্দমা পরিস্কার করতে গিয়েছিলেন ওয়ার্ডের এক সাফাইকর্মী। তিনি প্রথম নর্দমার কাছে ওই তলোয়ারটি পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি তলোয়ারটি নিয়ে প্রথমে ওয়ার্ড মাস্টার রমেন প্রসাদকে খবর দেন। তাঁর মাধ্যমে কাউন্সিলর নান্টুবাবুকে খবর দেওয়া হয়। এরপর প্রথমে তলোয়ারটি ওয়ার্ড অফিসে রাখা হয়। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই তলোয়ার দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোক জড়ো হতে শুরু করে। অবস্থা বেগতিক দেখে এবং দ্রুত ঝামেলা নিষ্পত্তি করতে তলোয়ারটি শিলিগুড়ি থানার পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়িতে জমা দেন কাউন্সিলররা। নান্টুবাবু বলেন, “তলোয়ারটি দেখে প্রাচীন ও দুষ্প্রাপ্য বলে মনে হচ্ছে। তাই থানায় জমা দিয়েছি। তাঁরাই যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিক।” অন্যদিকে, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জিনিসটি হাতে পাওয়ার জন্য তৎপরতা শুরু হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.