সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ভোটের ময়দানে পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নেমেছেন একই পরিবারের তিন বধূ। একজন তৃণমূল প্রার্থী, একজন বিজেপি প্রার্থী। আর একজন কংগ্রেসের হয়ে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পঞ্চায়েত ভোটে প্রচারে আলোয় চলে এসেছে পুরুলিয়ার আড়ষা ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম রুগড়ি।
[তৃণমূল প্রার্থীর পরিত্যক্ত পাম্পিং হাউসে হুমকিমূলক পোস্টারকে ঘিরে চাঞ্চল্য]
জঙ্গলমহলের জেলা পুরুলিয়া। পিছিয়ে পড়া জেলাও বটে। জেলার আড়ষা ব্লকের রুগড়ি গ্রামে পঞ্চায়েত ভোটের আঁচ পৌঁছে গিয়েছে একেবারে গৃহস্থের অন্দরে। প্রার্থী হয়েছেন একই পরিবারের তিন বধূ। সম্পর্কে তাঁরা পরস্পরের জা। একই পরিবারের তিন সদস্যকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল, বিজেপি ও কংগ্রেস। একটাই আসনে জয়ী হওয়ার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন। রাজনৈতিক লড়াই আছে ঠিকই। তবে দৈনন্দিন জীবনের ছন্দ কিন্তু নষ্ট হয়নি। ভোটযুদ্ধের কোনও প্রভাব পড়েনি হেঁশেলে। কলতলা, পুকুরঘাট কিংবা নির্বাচনী জনসভার মঞ্চ, প্রচারে অবশ্য খামতি রাখছেন না তিন জা। কেউ কাউকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ। কিন্তু, বাড়িতে তিনজনকে দেখে বোঝার উপায় নেই, তাঁরা একে অন্যের প্রতিপক্ষ।
[ভোটের আগেই দলবদল, তৃণমূলের মিছিলে হাঁটলেন সিপিএম প্রার্থী!]
রুগড়ি গ্রামের মণ্ডল পরিবারের বড়বউ মঞ্জু মণ্ডল। তিনি তৃণমূল প্রার্থী। মেজবউ আশা মণ্ডল বিজেপির। আর ছোটবউ জারু মণ্ডল কংগ্রেসের। এরা তিনজনই আড়শা গ্রাম পঞ্চায়েতের ছ’নম্বর আসনের প্রার্থী। গতবার এই আসনটি ছিল সাধারণ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। এবার এই আসনটি তফসিলি জাতির মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় কোনও রাজনৈতিক দলই সেভাবে প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছিল না। ফলে এই মণ্ডল পরিবারের তিন বধূকেই প্রার্থী করে বিজেপি, তৃণমূল ও কংগ্রেস। বাড়ির বড়বউ মঞ্জু মণ্ডল বলেন, ‘আমি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের আদর্শে বিশ্বাসী। তাই তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছি। ভোটের লড়াইয়ের সঙ্গে সংসারের কোনও সম্পর্ক নেই। সেখানে আমরা সবাই এক।’ একই কথা মেজবউ বিজেপি প্রার্থী আশা মণ্ডলেরও। তিনি বলেন, ‘আমরা ঘরে ঘরের মতো। আর বাইরে বাইরের মতো। সেখানে একেবারে যুদ্ধদেহিং মনোভাব। এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ব না। জিততে আমাকে হবেই।‘ তবে দুই জা-কেই অবশ্য প্রচারে নিয়ে যেতে চান পরিবারের ছোট বউ কংগ্রেস প্রার্থী জারু মণ্ডল। তাঁদের প্রচারে যেতেও আপত্তি নেই তাঁর। পরিবারের অন্য সদস্যদের অবশ্য কোনও বাদবিচার নেই। তাঁদের সাফ কথা, তিন বউ যখনই প্রচারে ডাকবেন, তখনই প্রচারে যেতে রাজি।
[৮ রাজনৈতিক বন্দি মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি, গাফিলতির অভিযোগ বিজেপির]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.