সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে তো? বাজারদর আছে তো নাগালের মধ্যে? সরেজমিনে দেখতে এবার শনিবার সাতসকালে পুরুলিয়ার বড় হাটে হাজির জেলাশাসক রাহুল মজুমদার।
গত শুক্রবারই জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একগুচ্ছ নির্দেশ দেন। তারপরই এদিন সকালেই বড় হাটে যান জেলাশাসক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) মুফতি শামিম সওকত, মহকুমা শাসক(পুরুলিয়া সদর) প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী। খবর পেয়েই তড়িঘড়ি বাজারে যান পুরুলিয়ার উপপুরপ্রধান বৈদ্যনাথ মণ্ডল ও টাউন থানার ওসি দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবারই আচমকা জেলা প্রশাসনিক ভবনে যাওয়ার আগে শহরের রাজপথে নেমে যান তিনি। আমজনতাকে মুখে মাস্ক, রুমাল, কাপড় বাঁধতে বলেন।
যাঁরা নিয়ম মানছেন না তাঁদের ধমক দিয়ে রীতিমত ‘শাসন’ করেন। এদিনও বড়হাটে এক পুর আধিকারিক মাস্ক ছাড়াই বাজার-হাট করতে আসায় তাঁকে জেলাশাসকের ধমক খেতে হয়। মুখে মাস্ক না দেখে জেলাশাসকের প্রশ্ন, “কি হল? নাক-মুখ ঢাকা নেই কেন? মাস্ক, রুমাল কোথায়?” উত্তর আসে, “নেই স্যার!” জেলাশাসকের সটান জবাব, “তাহলে বাড়ি চলে যান।”
তখনই হাটজুড়ে যেসব বিক্রেতা বা ক্রেতা গলার কাছে মাস্ক ঝুলিয়ে রাখেন তারা সঙ্গে সঙ্গে তা নাকে-মুখে বেঁধে নেন। বড় হাটে দাঁড়িয়েই আরেক পুর আধিকারিককে নির্দেশ দেন, মাছের বাজার আরও প্রসারিত করতে হবে। বিক্রেতাদের মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়াতে হবে বলেও জানান। তবে তাদের যাতে এই বৈশাখের দাবদাহে কোন সমস্যা না হয় তাই মাথার উপরে আচ্ছাদনেরও ব্যবস্থা করতে বলেন। ওসি ও উপপুরপ্রধানের সঙ্গে কথা বলে জেলাশাসক জানিয়ে দেন, এই বড় হাটের চারটি পয়েন্টে স্যানিটাইজার স্ট্যান্ডিং পোস্ট বসিয়ে দেওয়া হবে। জেলাশাসকের কথায়, “করোনা নিয়ে এখনও সাধারণ মানুষ সচেতন নন। আরও বোঝাতে হবে। সেই জন্যই আমাদের এইভাবে পথে নামা। এই কাজ আমাদের চলবে।” তবে এই বড় হাটের সবজি ও ফলের বাজার পুলিশ প্রসারিত করায় খুশি হন তিনি। অধিকাংশ সবজির দাম নাগালের মধ্যে থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। এদিন জেলাশাসকের আচমকা হাট পরিদর্শনের সময় শহরের লকডাউনের অবস্থা জানতে পুলিশ আকাশে ড্রোনও ওড়ায়।
ছবি ও ভিডিও: সুনীতা সিং
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.