Advertisement
Advertisement
Maheshtala

কাজ হারিয়ে কর্মস্থলেই লুট! মহেশতলার ব্যাঙ্ক ডাকাতি হার মানায় সিনেমার চিত্রনাট্যকেও

ধৃত দম্পতি-সহ তিন। উদ্ধার হয়েছে লুট হওয়ায় অর্থ ও সোনার গয়না।

Real life film! Police arrested couple in bank dacoity case at Maheshtala
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:December 1, 2024 8:00 pm
  • Updated:December 1, 2024 8:03 pm  

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: ঠিক যেন সিনেমার চিত্রনাট্য। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ডাকাতির ঘটনার কিনারা করে এমনই বলছেন দুঁদে পুলিশকর্তারা। এই ঘটনায় তল্লাশি চালিয়ে উস্তি ও উলুবেড়িয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক দম্পতি সহ তিনজনকে। উদ্ধার হয়েছে ব্যাঙ্ক থেকে খোয়া যাওয়া নগদ ৭৫ লক্ষ টাকা ও তিন কোটি টাকার সোনা। জানা যাচ্ছে, ধৃত আরিফ নামে ব্যক্তি এই ব্যাঙ্কেই সাফাইয়ের কাজ করতেন। মাস ছয় আগে কাজ হারান তিনি। তার পর ব্যাঙ্ক ডাকাতির ছক করেন। স্ত্রী ও ভাইকে নিয়ে অপারেশনের পর অবশ্য শেষরক্ষা হল না। ধরা পড়ে গেল তিন চোর।

ডাকাতির ঘটনা প্রথম নজরে আসে সোমবার, ২৫ নভেম্বর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার বাটা মোড়ের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কর্মীরা এসে দেখেন, ব্যাঙ্কের দরজা ও সমস্ত ভল্টের চাবি খোলা রয়েছে। ডিভিডিয়ারের কেবল কাটা এবং ডিভিডিয়ার উধাও। হিসেবনিকেশ করে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, খোয়া গিয়েছে নগদ প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা ও গোল্ড লোনের ৩ কোটি টাকা মূল্যের সোনা। বড়োসড়ো এই চুরির কিনারা করতে মাঠে নামে ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশ। ঘটনাস্থলে আসেন ডিআইজি, প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ আকাশ মাঘারিয়া। সিআইডির ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ চুরির কিনারা করতে ও দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তদন্তে নামে।

Advertisement

পুলিশি তদন্তে উঠে আসে চুরির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আরিফ হোসেন ও তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী রুবিনা বিবির নাম। চোরের দল রাষ্ট্রায়ত্ত ওই ব্যাঙ্কে থেকে ডিভিডিয়ার খুলে, কেবল কেটে দিলেও তদন্তকারীরা ওই ব্যাঙ্কের পাশেই আরও একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টারের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখতে গিয়েই আরিফ ও তার স্ত্রী রুবিনার হদিশ পান। এর পর মহেশতলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আরিফকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে উস্তিতে আরিফের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর বাপেরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী রুবিনাকে। পরে আরিফের ভাই শোয়েব হোসেনকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, যে চার চাকার গাড়িটিতে করে আরিফ দম্পতি ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে চুরি করতে আসে সেই গাড়ির চালক ছিল শোয়েব।

তদন্তকারীরা উলুবেড়িয়া থেকে উদ্ধার করেন ওই ব্যাংক থেকে খোয়া যাওয়া নগদ প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা এবং গোল্ড লোনের প্রায় তিন কোটি টাকার সোনা। তিনজনকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, প্রায় দেড় বছর ধরে মহেশতলার মেহমানপুরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতো আরিফ দম্পতি। যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ডাকাতি হয়েছে সেখানেই সে অস্থায়ী ঝাড়ুদারের কাজ করত। ছমাস আগে সেখান থেকে কর্মচ্যুত করা হয় তাকে। যদিও পরিকল্পনামাফিক তার আগেই সে ব্যাঙ্কের দরজার চাবি ও সমস্ত ভল্টের নকল চাবি তৈরি করে নেয়। সেইসব নকল চাবি দিয়েই ব্যাঙ্কের দরজা খুলে ঢুকে ভল্ট খুলে নগদ টাকা ও সোনা লুট করে। কিছুদিন আগে আরিফ মেটিয়াবুরুজের একটি ব্যাঙ্কে কাজে যোগ দিয়েছিল বলেও পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে। গ্রেপ্তারের ধৃত তিনজনকে নিয়ে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে রবিবার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে পুলিশ। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার রাহুল গোস্বামী ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অম্লান কুসুম ঘোষ-সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement