অর্ণব দাস, বারাকপুর: মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনার কিনারায় সিবিআই তদন্তে নামলেও তেমন কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেছিল পরিবার। রবিবারই আর জি কর হাসপাতালে ধর্ষণের পর খুন হওয়া তরুণী চিকিৎসকের বাবা তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ঠিক এর পরেরদিন, সোমবারই নিহতের পানিহাটির (Panihati) বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। দুপুরে সিবিআইয়ের দুই মহিলা অধিকারিক পৌঁছন সেখানে। নির্যাতিতার পরিবারকে ঘন্টা তিনেক জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সিবিআইয়ের আরও তিন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ বাড়িতে পৌঁছন। তদন্তকারী এই তিনজনের সঙ্গে ছিল ল্যাপটপ, স্ক্যানার, প্রিন্টার, ফাইল-সহ একাধিক যন্ত্রাংশ। বাড়ির বাইরে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা। প্রায় ৬ ঘন্টা পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েও কিছুই বলেননি সিবিআইয়ের অধিকারীকেরা। যদিও সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ এই জিজ্ঞাসাবাদে মা-বাবার অভিযোগ শুনে বয়ান রেকর্ড করেন তারা।
আর জি করের ঘটনার (RG Kar Hospital Case) তদন্তভার হাতে পেয়ে গত বৃহস্পতিবার প্রথমবার নির্যাতিতার পানিহাটির বাড়িতে যায় সিবিআই। তার পর থেকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে একাধিক অভিযোগ করেছিলেন নিহতের মা-বাবা। তারা দাবি করেছিলেন, মেয়েকে চাপে রাখা হয়েছিল। এই নারকীয়তা একজনের কাজ হতে পারে না। তাই গোটা চেস্ট বিভাগকে তদন্তের আওতায় আনা হোক। নৃশংস হত্যার পর পরই ঘটনাস্থল চারতলার সেমিনার হল সংলগ্ন একটি ঘর সংস্কার-সহ সন্তানহারা মা-বাবাকে একবার দেখা করার জন্য সাড়ে তিনঘন্টা অপেক্ষা করানো হয়। তা নিয়ে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগও তুলেছিলেন তাঁরা।
সোমবার প্রথমে দুজন, পরে ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জাম নিয়ে আরও তিনজন নির্যাতিতা চিকিৎসকের বাড়িতে পৌঁছনোয় এলাকায় কৌতূহল শুরু হয়েছে৷ তাহলে কি নির্যাতিতার বাড়ি থেকে গুরুত্বপূর্ণ কোনও ইলেকট্রনিক্স তথ্য সংগ্রহ করেছে সিবিআইয়ের ফরেনসিক দল? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে প্রত্যেকের মুখে মুখে। একইসঙ্গে প্রথমে যে দুই মহিলা সিবিআই (CBI)আধিকারিক এসেছিলেন, তাঁরা একটি ডায়েরি নিয়ে এসেছিলেন বলেই জানা গিয়েছে। সেই ডায়েরি নির্যাতিতার কিনা, এনিয়ে প্রশ্ন ওঠার পাশাপাশি ডায়েরির ছেঁড়া পাতার রহস্য ভেদ নিয়েও গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
কারণ, আগেরদিন রবিবারই নিহতের মা বাবা অভিযোগ করেছিলেন, মেয়ের ডায়েরির কয়েকটি পাতা ছেঁড়া ছিল, এর প্রমাণ তাদের কাছে আছে। যদিও বাড়িতে সিবিআই-এর জিজ্ঞাসাবাদ প্রসঙ্গে এদিন মুখ খুলতে চাননি পরিবারের কেউ। বাড়ি থেকেও বেরননি নির্যাচিতার মা-বাবা। ফোন করা হলে পরিবারের তরফে শুধুমাত্র জানানো হয়, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন না তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.