নিজস্ব সংবাদদাতা, বনগাঁ: মোবাইল চোর সন্দেহে এক যুবককে প্রথমে বেধড়ক মারধর। পরে উলঙ্গ করে শরীরে বিছুটি পাতা ঘষে এলাকায় ঘোরানোর অভিযোগ উঠল এক দোকানদার ও তার সাগরেদদের বিরুদ্ধে। এমনকী ওই যুবককে উলঙ্গ অবস্থায় নর্দমার জলে নামিয়ে মোবাইল খুঁজতেও বাধ্য করা হয়। পরে সেখান থেকে তুলে ফের মারধর করে অভিযুক্তরা। আক্রান্ত ওই যুবকের নাম নারায়ণচন্দ্র দাস৷ বাড়ি বনগাঁ থানার সাহাপাড়া এলাকায়। গত শুক্রবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ থানার ২ নম্বর রেলগেটে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ওই এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নারায়ণ পেশায় ভ্যান চালক। প্রত্যেকদিনের মতো শুক্রবারও ভ্যান নিয়ে কাজে বেরিয়ে ছিলেন৷ প্যাসেঞ্জার নামিয়ে যখন ২ নম্বর গেট এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিলেন তখন স্থানীয় এক দোকানদার ডেকে নিয়ে যায়। তারপর মোবাইল ফেরত চেয়ে মারধর করে।
এপ্রসঙ্গে আক্রান্ত নারায়ণবাবু জানান, শুক্রবার বিকেলে প্যাসেঞ্জার নামিয়ে ২ নম্বর গেট এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেসময় রাম নামে এক মোবাইলের দোকানদার তাঁকে ডেকে নিয়ে যায়৷ তারপর মোবাইল চুরি করেছিস ফেরত দে বলে মারধর করতে থাকে। কিছুক্ষণ পরে অভিযুক্তর বন্ধুরা এসেও মারধর শুরু করে। উলঙ্গ করে বিছুটি পাতা লাগিয়ে দেয় শরীরে। লাঠি দিয়ে মারধর করার পাশাপাশি রেলপার এলাকায় ঘুরিয়ে মোবাইল খুঁজতে পচা নর্দমায় নামায়। অভিযুক্তদের মারের আঘাতে তাঁর ডান চোখে রক্ত জমে যায়, মুখ ফেটে যায়। পরে রাত আটটা নাগাদ ভ্যান ও মোবাইল আটকে তাঁকে ছেড়ে দেয় রাম ও তার বন্ধুরা। খবর পেয়ে আক্রান্ত নারায়ণবাবুকে উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। সেখান থেকে ফিরে অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে বৃদ্ধা মা ও স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে রাতেই বনগাঁ থানার দ্বারস্থ হন আক্রান্ত নারায়ণ দাস।
নারায়ণের স্ত্রী রূপাদেবী বলেন, “আমার স্বামীকে মোবাইল চোর বদনাম দিয়ে উলঙ্গ করে মারধর করা হয়েছে। ভ্যান ও মোবাইল আটকে রেখে ১০ হাজার টাকা দাবি করেছে রাম ও তার বন্ধুরা। আমরা গরিব মানুষ, এত টাকা কোথায় পাব।” স্থানীয় এক শিক্ষক সুদীপ্ত রায়ের কথায়, ওই যুবক যদি চুরিও করে থাকে তাহলে বিচারের জন্য আইন আছে৷ এভাবে শাস্তি দেওয়া ঠিক নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.