রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও জ্যোতি চক্রবর্তী: রবিবার কলকাতার ২০০ টি স্কুলে বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি আর সোমবার সকালে জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবার (LeT) তরফে হুমকি চিঠি পাঠানো হল বনগাঁর বিজেপি প্রার্থী তথা মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুরকে (Santanu Thakur)! এদিন দুপুরে শান্তনুর নামে স্পিড পোস্টে আসা চিঠিতে স্পষ্ট বাংলায় লেখা – ”পশ্চিমবাংলায় NRC হলে এবং তার ফলে মুসলমানদের উপর অত্যাচার হলে পশ্চিমবাংলা তথা সমগ্র ভারত জ্বলবে, আপনাদের ঠাকুরবাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হবে। কেউ ঠাকুরবাড়ি বাঁচাতে পারবে না।” তার নিচে লেখা – ”আমরা লস্কর-ই-তইবার সদস্য।”
রবিবারই মতুয়াদের ‘বড়মা’ বীণাপানি দেবীর ঘর ‘দখল’ নিয়ে ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তুমুল অশান্তি বেঁধেছিল। বীণাপানি দেবীর ঘর খুলে শান্তনু ঠাকুর ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ করে তাঁর জেঠিমা তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। এনিয়ে রাত পর্যন্ত অশান্ত পরিবেশ ছিল বনগাঁর ঠাকুরবাড়িতে। আর সোমবার দুপুরেই শান্তনু ঠাকুরের কাছে এল লস্করের হুমকি চিঠি। তা নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন শান্তনু। চিঠিটি তিনি বিস্তারিত পড়ে শোনান। তা দেগঙ্গা থেকে নজরুল ইসলাম মাহের আলি, ফাজের আলি বলে কেউ পাঠিয়েছেন।
বাংলা টাইপরাইটারে লেখা চিঠির প্রতি ছত্রে NRC নিয়ে হুমকি। স্পষ্ট লেখা, এনআরসি-র জন্য পশ্চিমবাংলার মুসলমানদের উপর অত্যাচার হলে ঠাকুরবাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হবে। যে মুহূর্তে বাংলায় এনআরসি লাগু করা হবে, সেই মুহূর্তেই কাজ শুরু হবে। উল্লেখ্য, কেন্দ্র সরকার সম্প্রতি দেশজুড়ে CAA লাগু করেছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী, প্রতিবেশী ৬ রাষ্ট্রের অত্যাচারিত অ-মুসলিম শরণার্থীরা আবেদনের ভিত্তিতে পাবেন ভারতের নাগরিকত্ব। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তার বিরোধিতা করে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই বলেছেন, CAA-র পরবর্তী ধাপ NRC. তাতে নাগরিকত্ব হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে, তৃণমূলের এই অবস্থানের বিরোধিতা করে বিজেপির বক্তব্য, এটা নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন, কেড়ে নেওয়ার নয়। আর শান্তনু ঠাকুর নিজে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির বনগাঁর সাংসদ, মতুয়াদের জনপ্রতিনিধি। তাই তাঁর বিরুদ্ধেই এমন হুমকি চিঠি এল বলে মনে করা হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.