ধীমান রায়, কাটোয়া: সংবাদ প্রতিদিন ডট ইনের খবরের জের, অবশেষে ঘর পেল কাটোয়ায় ভাড়াবাড়ি থেকে বিতাড়িত অসহায় বৃদ্ধ ও তার মেয়ে। দিন চারেক আগেই বিদ্যুতের বিল মেটাতে না পারায় ভাড়াবাড়ি থেকে ওই দুজনকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করেছিলেন বাড়িওয়ালা। মেয়ের হাত ধরে খোলা আকাশের নিচে ঠাঁই নিয়েছেন বছর ৭০-এর বৃদ্ধ। ছিল না খাদ্যের সংস্থানও। স্থানীয়দের সহায়তায় কোনওরকমে মাঠেই দুদিন কাটিয়েছেন বাবা-মেয়ে।
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার সকালে। এদিন কাটোয়া স্কুল মাঠে এক মহিলা ও বৃদ্ধকে বসে থাকতে দেখা যায়। সাহায্যে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রাই। জানা যায়, শেষ সম্বলটুকু বিক্রির পর মেয়েকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতেই ঠাঁই হয়েছিল ওই বৃদ্ধের। তবে সেখানে দুমাসের বিদ্যুতের বিল বাকি থেকে যায়। এরপর সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয় বৃদ্ধ ও তার মেয়েকে। বাধ্য হয়ে মেয়েকে নিয়ে রবিবার থেকে কাটোয়া কলেজ মাঠে বসে থাকেন নবকুমারবাবু। তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রাই। জানা যায়, বৃদ্ধের ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরেও কোনও সদুত্তর মেলেনি। এরপর বাধ্য হয়ে স্থানীয়রাই তাদের খাবার ও ত্রিপলের ব্যবস্থা করেন।
সংবাদ প্রতিদিন ডট ইনে বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর ঘটনাটি জানতে পেরে কাটোয়া মহকুমা শাসক সৌমেন পাল ও পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ওই বৃদ্ধের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগী হন। মহকুমাশাসক ও পুরসভার চেয়ারম্যানের নির্দেশ ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় নবকুমারবাবুর সঙ্গে দেখা করতে যান। এরপর মহাকুমা শাসক ডেকে পাঠান বৃদ্ধের ছেলেকে। এদিনই কলকাতা থেকে কাটোয়া যান বৃদ্ধের ছেলে সুজিত। এরপর নিজের আর্থিক অবস্থার কথা প্রশাসনিক আধিকারিকদের জানান তিনি। তবে আপাতত মাস তিনেক বাবা ও বোনের সমস্ত খরচ বহন করার কথা জানিয়েছেন তিনি। আপাতত ওই বৃদ্ধ ও তার মেয়ের জন্য প্রশাসনের তরফে একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। দেওয়া হয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু সামগ্রীও। কাটোয়া পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “আপাতত তিন-চারমাস ওই বৃদ্ধ ও তার মেয়ে ভাড়াবাড়িতেই থাকবেন। পুরসভা থেকে অনাথ মানুষদের জন্য একটি বাসস্থান তৈরি হচ্ছে। তিন চারমাসের মধ্যে সেখানেই দুজনের থাকার স্থায়ী ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.