ছবি: সাপ ধরছেন হুম রাণা। জয়ন্ত দাস।
ধীমান রায়, কাটোয়া: পড়শিদের বাড়িতে বিষধর সাপ বের হলেই ডাক পড়ে হুমের। পূর্ব বর্ধমানের ভাতার বাজারের বাসিন্দা পেশায় ব্যবসায়ী হুম রানাই ভরসা প্রতিবেশীদের কাছে। ঘরের মধ্যে ফণা তুলে সাপ দাঁড়িয়ে থাকলে কার না ভয় লাগে? কিন্তু অনায়াসে সেই সাপ ধরে মাঠে ছেড়ে দিয়ে আসেন হুম।
ভাতার বাজারের বাসিন্দা হুম রানা (৩৮) পেশায় ব্যবসায়ী। কুলচন্ডা মোড়ের কাছে তার একটি স্টেশনারি দোকান রয়েছে। বাড়িতে রয়েছেন বাবা, স্ত্রী ও এক মেয়ে। মেয়ে প্রেরণা একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। ব্যবসার পাশাপাশি সাপ ধরা নেশা হুমের। তিনি বলেন, “এখনও সাপ নিয়ে অধিকাংশ মানুষের আতঙ্ক রয়েছে। সাপ দেখলে আগে তাদের মারতে চায়। আমি সাপ বাঁচানোর উদ্দেশ্যেই সাপ ধরি। গৃহস্থ বাড়িতে সাপ ধরার পর সেগুলি মাঠে ছেড়ে দিয়ে আসা হয়।”
[ বাগনানে ছ’নম্বর জাতীয় সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত চার, আহত ২ ]
এমনই একটি ঘটনা ঘটল মঙ্গলবার সকাল ১১ টায়। হুম রানার বাড়ি কাছে একটি হোটেলের পিছনে হোটেল মালিকের বাড়িতে একটি গোখরো সাপ দেখা যায়। জানা গিয়েছে, গৃহবধূ খাটের তলায় রাখা মালপত্র সরাতে গিয়ে সাপটি দেখতে পান। শব্দ পেয়েই সাপটি ফণা তুলে দাড়িয়ে পড়ে। গৃহকর্তা সুশান্ত দত্ত ডাক পাড়েন হুমকে। মাথার দিকটা বাঁকানো একটি লোহার শিক নিয়ে তিনি চলে আসেন প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই। তা দিয়েই সাপটিকে কায়দা করে ফেলেন তিনি। তারপর গোখরোটিকে একটি প্লাস্টিকের জারে ভরে মাঠে ছেড়ে দিয়ে আসেন হুম।
স্থানীয় বাসিন্দা সর্পপ্রেমী ধীমান ভট্টাচার্য বলেন, “আজকের দিনে সাপকে বাঁচানোর পাশাপাশি নিঃস্বার্থভাবে পরের উপকার খুব কম মানুষেই করেন। হুম রানা এজন্য সবার প্রশংসার পাত্র।” স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে শুধুমাত্র ওই এলাকাতেই নয়, আশপাশের গ্রামেও অনেকেই চেনেন হুম রানাকে। তার মোবাইল নম্বরও অনেকেই নিয়ে রেখেছেন যাতে সাপের মুখোমুখি হলে পরিত্রাতা হুমকে খবর দিতে পারেন। ভাতারের বিডিও শুভ্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি শুনেছি হুম রানা নামে ওই যুবক গৃহস্থ বাড়িতে সাপ ধরে অনেকের উপকার করেন। এতে অনেক সাপের প্রাণরক্ষা হয়। আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই।”
[ উদয়পুর সৈকতে বাংলার সীমানা ‘দখল’, রাজ্যের ফলক ভাঙল ওড়িশা সরকার ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.