শ্রীকান্ত পাত্র ও রাজা দাস: তিন সপ্তাহের লকডাউনের জেরে কাজে এসে বিপাকে পরিযায়ী শ্রমিকরা। ঘাটালে আটকে পড়েছেন বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের কমপক্ষে দশ হাজার শ্রমিক। অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে বাড়ি ফিরতে পারছেন না দক্ষিণ দিনাজপুরের বেশ কয়েকজন। কী খাবেন, কোথায় থাকবেন এই ভাবনায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে তাঁদের। সরকারি সাহায্যের আশায় প্রহর গুনছেন বিপদগ্রস্তরা।
ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় দশ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক আটকে পড়েছেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, শুধুমাত্র ঘাটাল ব্লকে রয়েছেন অন্তত ৩ হাজার শ্রমিক। ঘাটাল পুর এলাকাতেই রয়েছেন অন্তত ৬০০ জন। দাসপুর এক নম্বর ব্লকে ১৫০০ পরিযায়ী শ্রমিক আটকে রয়েছেন। দাসপুর দুই নম্বর ব্লকে আটকে রয়েছেন প্রায় আড়াই হাজারের মতো ভিন জেলার শ্রমিক। একইভাবে চন্দ্রকোণার দুটি ব্লকেও আটকে রয়েছেন অন্তত ২ হাজারের মতো শ্রমিক। তাঁদের বেশিরভাগই বীরভূম ও মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। ওই শ্রমিকরা বলেন, “করোনা ভাইরাসের জেরে দেশে হঠাৎ লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার । ফলে গাড়ি চলাচল বন্ধ। যা সঞ্চয় ছিল তা শেষ হওয়ার পথে। যা টাকাপয়সা আছে তা দিয়ে আর দুই কি তিনদিন চলবে। তারপর কী খাব ? বাড়ি ফিরে যেতেও তো পারছি না। ” প্রশাসনের সাহায্যের আশায় রয়েছেন তাঁরা।
দাসপুর এক নম্বর ব্লকের বিডিও বিকাশ নস্কর বলেন, “সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী ভিন জেলার যে শ্রমিকরা আটকে পড়েছেন তাঁদের বাড়ি ফিরে যাওয়া যাবে না। যে যেখানে আছেন সেখানেই থাকুন। তাঁদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। আমরা প্রয়োজনীয় চাল, ডাল তাঁদের কাছে পাঠিয়ে দেব। ” চন্দ্রকোণা দুই নম্বর ব্লকের বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ি বলেন, “ সরকারি নির্দেশ এসেছে। প্রতিটি পঞ্চায়েত ধরে ধরে আমরা ভিন জেলার এই ধরনের শ্রমিকের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এই তালিকা জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ”
এদিকে, অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতিতে আটকে পড়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অন্তত পাঁচশো জন শ্রমিক। গত তিনদিন অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে তাঁদের। খাবার ও সহায়তায় কাতর আরজি জানিয়েছেন তাঁরা।
বালুরঘাট লোকসভার বিজেপি সাংসদ তথা নেতা সুকান্ত মজুমদার জানান, এরকম প্রচুর মানুষের খোঁজ মিলেছে। তাঁদের সহায়তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান অর্পিতা ঘোষ বলেন, “আমি এই ব্যপারে জেলা প্রশাসন, ডিভিশন্যাল কমিশনার এবং মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। আমরা এদিক থেকে সবরকম ভাবে চেষ্টা চালাচ্ছি।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.