বিক্রম রায়, কোচবিহার: ঠিক যেন সিনেমা! দিনেদুপুরে ব্যস্ত রাস্তা দিয়ে চলেছে দূরপাল্লার বাস। হাত নাড়িয়ে দাঁড় করায় বেশ কয়েকজন। বাস দাঁড়ায় তাদের দেখে। কিন্তু বাসে ওঠার পরই ভোলবদল! বাসে ওঠা দুষ্কৃতীদের পকেট থেকে ততক্ষণে হাতে দেখা যায় আগ্নেয়াস্ত্র। তা দেখিয়ে দেওয়া হয় শাসানি! যার কাছে যা দামি জিনিসপত্র আছে, তা দিয়ে দিতে বলা হয়। কয়েকজন আতঙ্কে দিয়ে দেন। তবে যাত্রীদের একাংশ, চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন। তাঁদের কাছে থাকা জিনিসপত্র দুষ্কৃতীদের হাতে তুলে দিতে অস্বীকার করেন। তাতেই অগ্নিশর্মা দুষ্কৃতীরা। এক রাউন্ড গুলি চলে বলেও অভিযোগ। কোচবিহারের মাথাভাঙার ঘোকসাডাঙা থানার হিমঘর লাগোয়া এলাকার ঘটনায় আঁতকে উঠছেন প্রায় সকলেই।
সোমবার সকালে কোচবিহার থেকে নবদ্বীপে একটি বাস যাচ্ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মাথাভাঙার ঘোকসাডাঙা থানার হিমঘর এলাকায় বাসটিকে থামায় দুষ্কৃতীরা। যাত্রীদের দাবি,বাসে অন্ততপক্ষে ২-৩ জন দুষ্কৃতী ওঠে। তাদের সকলের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। চালকের মাথায় বন্দুক ঠেকায় দুষ্কৃতীরা। সহকারী চালকের পায়ে কুড়ুলের কোপও দেয়। যাত্রীদের দামি জিনিসপত্র লুটপাটের চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। কেউ কেউ জিনিসপত্র দিয়ে দেয়। তবে কারও কারও কাছ থেকে বাধাও পায়। যাত্রীদের দাবি, লুটপাট শেষে এক রাউন্ড গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। যদিও গুলিতে হতাহতের কোনও খবর নেই। তার পর বাস ছেড়ে পালায় তারা। আতঙ্কে চিৎকার চেঁচামেচি করতে শুরু করেন যাত্রীরা। তাতেই আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে যায়।
খবর দেওয়া হয় পুলিশে। তড়িঘড়ি পুলিশ সুপার-সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। সহকারী চালকের চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা হয়। ওই বাসে থাকা যাত্রীদের থেকে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সংগ্রহ করে পুলিশ। ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে যাত্রীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে। রাস্তার মাঝে বাস দাঁড় করিয়ে লুটপাটের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পুলিশি নিরাপত্তা। স্থানীয়দের অনেকেরই দাবি, যত দিন যাচ্ছে কোচবিহারে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বেড়ে চলেছে। পুলিশি গাফিলতিতে এমন ধরনের কাণ্ড ঘটেছে বলেই অভিযোগ তাঁদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.