চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: যুগ এগিয়েছে। বদলেছে জীবনধারা। কিন্তু মননে কি এগিয়েছে সাধারণ মানুষ? বিজ্ঞানের যুগে একদল মহিলার করোনা মাতার পুজোর পর এই প্রশ্ন যেন আরও বেশি প্রাসঙ্গিক।
করোনা সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে করোনা মাতার পুজো। বারাবনির পর এবার আসানসোল ও রানিগঞ্জের মহিলারাও শুরু করেছেন করোনা মাতার পুজো। শুক্রবার আসানসোল উত্তর থানার রেলপার এলাকার মহিলারা নুনিয়া নদীর পাড়ে এসে জড়ো হন। ঠিক যেভাবে ছট পুজো হয় ঠিক সেইরকম ভাবেই জলাধারের পাশে করোনা মাতার পুজো করেন তাঁরা। ভক্তদের সঙ্গে ছিল পান, আতপ চাল, লাড্ডু ও সিঁদুর। পাড়ের মাটি পরিষ্কার করে সেখানেই পুজো সারেন তাঁরা। পুজোর শেষে ওই সামগ্রীগুলো মাটিতে পুঁতে দেন। একইভাবে রানিগঞ্জের জেকে নগর এলাকায় জলাধারের পাশে করোনা মাতার পুজো হয়। তবে পুজোর ব্যস্ততায় ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মানার কথাও ভুলে যান করোনা মাতার ভক্তরা। মুখে মাস্ক না পরেই দিব্যি পুজোতে অংশ নেন তাঁরা। মানা হল না সামাজিক দূরত্ববিধিও। করোনা মাতার পুজোতে অংশ নেওয়া কৃতি মিশ্র বলেন, “আগে বসন্ত রোগ হলে বাসন্তী মাতার পুজো হত। সেরকম ভাবেই করোনা মাতার পুজো করলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এই বিশ্বাসে আমরা পুজো করছি।”
এই ঘটনার প্রতিবাদে সুর চড়িয়েছেন বিজ্ঞানমঞ্চের কর্মীরা। তাঁরা বলেন, “করোনা সংক্রমণের জেরে লকডাউনে দেশের মন্দির, মসজিদ, গির্জা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কোনও ভক্ত তখন ঠাকুর দেবতার কাছে যাননি। কিন্তু সংক্রমণ রুখতে দেখা গিয়েছে প্রশাসন, স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার, সমাজসেবী সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের। পুজো যদি করতে হয় তবে তাঁদেরই করা উচিত।” পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের রাজ্য কাউন্সিলের সদস্য কিংশুক মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই ভাইরাস কী করে মাতা বা পিতা হতে পারে তা কুসংস্কারাচ্ছন্ন ভক্তরাই জানেন। শিক্ষার অভাব থেকে এই হিড়িক শুরু হয়েছে। এসব করলে সংক্রমণ আরও বাড়বে।”
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.