সোমনাথ পাল, বনগাঁ: চোখে ভাল দেখতে পান না। শুনতে পান না কানেও। ছেলে ও বউমার অত্যাচারে বাড়িছাড়া সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধা। কখনও অচেনা কারও বাড়ির বারান্দায়, কখনও আবার খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় দিন কাটছে তাঁর। ছেলে আর বউমার অত্যাচার আর সহ্য করতে পারছেন না! শেষে তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন চন্দনা সরকার নামে ওই বৃদ্ধা। অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয়।
[ব্যান্ডেলে গ্রেপ্তার জেএমবি জঙ্গি, হুগলিতে স্লিপার সেলের সন্ধানে তল্লাশি গোয়েন্দাদের]
বনগাঁ শহরের চাঁপাবেড়িয়ার বাসিন্দা চন্দনা সরকার। স্বামী প্রয়াত। তবে দুই ছেলে রয়েছে বৃদ্ধার। চন্দনাদেবী জানিয়েছেন, বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা সংসার পেতেছে বড় ছেলে। বৃদ্ধা মাকে দেখে না সে। সত্তর পেরোনো মায়ের দায়িত্ব নিতে রাজি নয় ছোট ছেলেও। তাঁর স্ত্রীও সুবিধের নয়। কিন্তু তাঁর কথাতেই চলে সে। দুই ছেলে ও বউমাদের নিয়ে অবশ্য কোনও অভিযোগ ছিল না চন্দনাদেবীর। শেষ বয়সে স্বামীর ভিটেতে একাই থাকছিলেন তিনি। রাস্তার ধারে বসে শাক বিক্রি করে কোনওমতে পেট চালাচ্ছিলেন ওই বৃদ্ধা। কিন্তু সেটুক ‘সুখ’-ও আর সইল না! চন্দনা সরকারের অভিযোগ, তাঁর স্বামী ভিটেটাও নিজেদের নামে লিখিয়ে নিতে চাইছে ছোট ছেলে ও তার স্ত্রী। রাজি না হওয়ায়, বৃদ্ধা শ্বাশুড়িকে রীতিমতো চেলা কাঠ দিয়ে মারধর করেছে ছোট ছেলের স্ত্রী। মারে চোটে সারা শরীরে কালসিটে পড়ে গিয়েছে। দিনের পর দিনের চলেছে অত্যাচার। বাধা দেওয়া দূর অস্ত, সম্পত্তির লোভে স্ত্রীর পাশেই দাঁড়িয়েছে ছেলে। ফলে বাধ্য হয়েই স্বামীর ভিটে ছেড়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে চন্দনা সরকারকে।
কিন্তু, ছোট ছেলে ও বউমার নির্মম অত্যাচার আর কতদিন সহ্য করা যায়! পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন চন্দনা সরকার। বনগাঁ থানায় ছোট ছেলে ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। দাবি একটাই, দায়িত্ব নিতে হবে না। শেষ বয়সে স্বামীর ভিটেতে তাঁকে অন্তত একটু শান্তিতে থাকতে দিক ছোট ছেলে ও বউমা!
[রেশন পাচারের চেষ্টা, গ্রামবাসীদের তৎপরতায় উদ্ধার আটা ও গম]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.