সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: জনা পঞ্চাশ ছেলে-মেয়ে৷ কেউ খেলে ফুটবল, কেউ টেবল টেনিস। শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া নকশালবাড়ি ও মাটিগাড়ায় গেলে দেখা মিলবে অনুশীলনে ব্যস্ত তাঁরা৷ আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে এ আবার এমন কী? খেলাধূলা করলে অনুশীলন তো করতেই হয়৷ কথাটা ভুল নয়৷ কিন্তু মাটিগাড়া কিংবা নকশালবাড়িতে যাঁদের অনুশীলন করতে দেখা যায়, তাঁরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও সময়, হয় পাচার হয়ে গিয়েছিল কিংবা ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছিল৷ খেলাকে হাতিয়ার করেই এখন মূলস্রোতে ফেরার চেষ্টা করছেন ওই ছেলে-মেয়েরা৷ তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে দার্জিলিং জেলা লিগ্যাল এইড ফোরাম।
দার্জিলিং জেলা লিগ্যাল এইড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার বলেন, “অভাবের তাড়নায় এই সমস্ত ছেলে মেয়েদের যাতে বিপথে চলে না যায়, সে দিকটি লক্ষ্য রাখার জন্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে৷ তাতে সাড়াও মিলছে। শুধু পাচার হয়ে যাওয়া বা উদ্ধার হওয়া ছেলে মেয়েরাই নয়, তাঁদের দেখে গ্রামের অনেক ছেলে মেয়েই খেলাধুলায় আগ্রহ দেখাচ্ছে।” ছেলে-মেয়েদের মাঠমুখী করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন ফুটবল কোচ কমলেশ ভট্টাচার্য ও স্বপন দে। টেবল টেনিসে সহায়তা করছে উত্তরবঙ্গ টেবল টেনিস সংস্থা। নিখরচায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত টেবিল খেলোয়াড় মান্তু ঘোষ। অনেকেই শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ পরিচালিত নৈশ ফুটবল প্রতিযোগিতায় বলবয় হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। ক্রীড়া পরিষদ সচিব অরূপরতন ঘোষ বলেন, “এদের যেভাবে মূলস্রোতে ফেরানোর চেষ্টা করছে লিগাল এইড ফোরাম, তা প্রশংসার দাবি রাখে। এঁদের সাহায্য করতে পারলে ভাল লাগবে।’’
[নিজের চার মাসের মেয়েকে মাটিতে আছড়ে খুন যুবকের]
নকশালবাড়ির সাতভাইয়া চা বাগান এলাকায় ফুটবল এবং বিডিও অফিসে টেবল টেনিস চর্চা চলছে পুরোদমে। মাটিগাড়াতেও স্থানীয় স্কুল ময়দানে চলছে ফুটবল খেলার অনুশীলন। রাজু মুণ্ডা, সীতারাম খেড়িয়া, অরুণ মুণ্ডা, সরিতা ওঁরাও, দিদিমণি সরেনরা এখন নিয়মিত স্কুলে যায়। সেই সঙ্গে সপ্তাহে তিন দিন ফুটবল ও টেবল টেনিস খেলা শেখে। খেলোয়াড় হিসেবেই জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে চায় সকলে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.