সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাওয়া আছে। আবার হাওয়া নেইও। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নিচে। মে মাসের ভরা গ্রীষ্মে যা বিরলের মধ্যে বিরলতম। অথচ মনে হচ্ছে যেন উনুনের আঁচে বসে গরম জলে স্নান হচ্ছে। গত কয়েকদিনে গ্রীষ্ম সন্ধ্যার সেই পরিচিত ঝড়-জল অধরাই রয়ে যাচ্ছে মহানগরে। ভরা গরমে ঝড়বৃষ্টির অভাবে ঘেমে-নেয়ে একশা হতে হচ্ছে। আশু সুরাহারও ইঙ্গিত নেই। কারণ হাওয়া অফিস জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় শহরে বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। সব মিলিয়ে কলকাতার আবহাওয়ায় এ বড় দুঃসময়। রবিবার শহরের তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। পারদ সেভাবে না চড়লেও আর্দ্রতা এবং কড়া রোদের আঁচে নাভিশ্বাস। তবে, বঙ্গে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা না জানানো হলেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে ১৩ রাজ্যকে সতর্ক করে প্রবল ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে৷ উত্তর ভারতে তৈরি হওয়া মরুঝড়ের প্রভাবেই এই সতর্কতা বলে আগাম জানানো হয়েছে৷
[বাঘের উচ্ছিষ্ট মাংস বাঙালির পাতে! নজরে চিড়িয়াখানা কর্মী]
মহানগরের এই মুমূর্ষু দশার জন্য গিয়ে বিশেষজ্ঞদের আঙুল বঙ্গোপসাগরের বিপরীত ঘূর্ণাবর্তের দিকে। প্রাক বর্ষার মরশুমে যার উপস্থিতি স্বাভাবিক। এবং এই মুহূর্তে তামাম দক্ষিণবঙ্গবাসীর কাছে যে খলনায়ক। কেন? আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, বঙ্গোপসাগরের এই বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত মহানগরের পরিমণ্ডলে দিনরাত ঢুকিয়ে যাচ্ছে এন্তার জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস। যা কিনা ঘাম শুকিয়ে দেওয়ার বদলে ঘাম হয়েই বসে যাচেছ শরীরে। ফলে ঘাম উবে যাওয়ার কোনও অবকাশ থাকছে না। এই অবস্থায় চড়া রোদে বেরোলে জ্বলে-পুড়ে খাক হতে হচ্ছে।
“স্রেফ থার্মোমিটার দেখলে কলকাতাবাসীর দুর্গতির আন্দাজ পাওয়া যাবে না”-বলছেন কেন্দ্রীয় আবহাওয়া মন্ত্রকের উপ মহানির্দেশক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি জানান, গরম কতটা অনুভূত হবে সেটা তাপমাত্রা ছাড়াও আরও কিছু প্রাকৃতিক অনুষঙ্গের উপর নির্ভরশীল। যেমন, আপেক্ষিক আর্দ্রতা, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে ফারাক। বর্তমানে মহানগরের করুণ পরিস্থিতির জন্য এই দুই প্রাকৃতিক অনুষঙ্গকেই দায়ী করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, সর্বনিম্ন আর্দ্রতা একদিকে যেমন ৬৫ শতাংশের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে, অন্যদিকে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে ফারাক মাত্র ৬ ডিগ্রি হওয়ায় অস্বস্তি দ্বিগুণ হচ্ছে।
এদিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮.১ ডিগ্রি (+২)। জেলার অবস্হাটা কিন্তু এতটা খারাপ নয়। দিনের চাঁদিফাটা গরমের দুর্ভোগে কিছুটা প্রলেপ দিচ্ছে ঝড়বৃষ্টি। রবিবার বীরভূম, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, দুই মেদিনীপুর, নদিয়ায় ব্যাপক ঝড়জল হয়েছে। এদিন পঁচিশ মিনিটের প্রবল ঝড়ে ও শিলাবৃষ্টিতে কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে নদিয়ার দু’টি ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম। ভেঙে চুরমার হয়েছে একাধিক বাড়ি। আশ্রয়হীন বহু মানুষ।জানা গিয়েছে, প্রবল হাওয়ার দাপটে দু’জন বয়স্ক মানুষকে উড়িয়ে নিয়ে ফেলেছে বাঁশঝাড়ের উপরে। কোনওরকমে তাঁদের প্রাণে বাঁচিয়ে নিচে নামান এলাকার মানুষ। গবাদি পশুর মৃতু্য হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে মাঠে ফলন্ত পাট, সবজি ও ধানের। শুধু ওই দু’টি ব্লকেই নয়, জেলার কৃষি আধিকারিক রঞ্জন রায়চৌধুরি জানিয়েছেন, জেলার ছয়টি ব্লকে ধান, পাট ও সবজির ক্ষতির খবর পাওয়া গিয়েছে৷
[কচি-কাঁচাদের সঙ্গে মঞ্চে ‘বৃদ্ধ’ সাজবেন মদন মিত্র]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.