বাবুল হক, মালদহ: স্কুলে চারটি শ্রেণি। পঞ্চম থেকে অষ্টম। পড়ুয়ার সংখ্যা ৮১। শিক্ষক মাত্র একজন। ছুটছেন এক শ্রেণি থেকে অন্য শ্রেণি। আবার ঢুঁ মারছেন মিড ডে মিলের রান্নার ঘরে। মাঝে মধ্যে স্কুলে পড়ানোর দায়িত্ব সামলাছে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। অভিযোগ প্রায় দুই বছর ধরে এমনভাবেই চলছে, মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাংনদিয়া বাংরুয়া মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র। এমন চলতে থাকলে অচিরেই স্কুলটি বন্ধ মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।
২০০১ সালে মালদহের (Malda) থেকে ছয়জন শিক্ষক নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রটির পথ চলা শুরু। ২০০৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অনুমোদন পায়। দুজন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। পরে ধাপে ধাপে মোট ছয়জন শিক্ষক এই স্কুলে যোগ দেন। সেই শেষ। আর কোনও শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। ইতিমধ্যে এক শিক্ষক মারা যান। বাকিরা অবসর নেন। ২০২২ সাল থেকে সেখানে মাত্র একজন শিক্ষক রয়েছেন। নেই কোনও গ্রুপ ডি কর্মী। ফলে যিনি প্রধানশিক্ষক তাঁকেই করতে হচ্ছে পিওনের কাজ!
স্কুলের প্রধান শিক্ষক রাহানুল হক। কোন কাজটি করবেন তা বুঝতে পারছেন না। কার্যত দিশেহারা অবস্থা তাঁর। তিনি বলেন, “আমাকে পড়ানোর পাশাপাশি সমস্ত কাজ করতে হয়। কেন্দ্রটিতে খাতায় কলমে ৮১ জন পড়ুয়া থাকলেও নিয়মিত আসে ৩০-৩৫ জন। শিক্ষক চেয়ে ব্লক, জেলা ও রাজ্যে আবেদন করেছি। কিন্তু কোনও সাড়া পাইনি।” শিক্ষকের অভাবের জন্যই ছাত্ররা স্কুলে আসেন না বলে মেনে নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক থেকে স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা রাহানুল হক ও হাসিনা বিবিরা জানান, গ্রামে স্কুল হওয়ায় খুব আনন্দ হয়েছিল। কিন্তু এখন ছাত্র থাকলেও শিক্ষক নেই। একজন শিক্ষক দিয়ে কোনও রকমে টিমটিম করে চলছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে শিক্ষক শূন্য হয়ে পড়বে স্কুলটি। তখন ছাত্রদের কী হবে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.