দেবব্রত মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: গোটা দেশের পর এবার সুন্দরবন। রবিনহুড বাহিনীর বদান্যতায় ভরপেট খেতে পেল সুন্দরবনের পথশিশুরা। স্বাধীনতা দিবসকেই বেছে নিয়ে চলল খাবার বিতরণের পালা। সুন্দরবনের ক্যানিং স্টেশন চত্বর থেকে শুরু করে মাতলা নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা বস্তি ও একটি হোম মিলিয়ে প্রায় হাজার খানেক বাচ্চাদের মধ্যে দুপুরের খাবার বিলি করলেন রবিনহুড বাহিনীর সদস্যরা। তবে শুধু সুন্দরবন নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পথশিশুদের মুখে অন্ন তুলে দিতে বদ্ধপরিকর এই রবিনহুড বাহিনী। পরিসংখ্যান বলছে বছরে অন্তত ১০ লক্ষ মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য নিরন্তর কাজ করে চলেছে এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
প্রতিবছর বিশেষ কোনও দিনেই দুঃস্থদের জন্য দুপুরের খাবারের আয়োজন করে রবিনহুড বাহিনী। ৭২-র স্বাধীনতায় এখনও অভুক্ত দেশবাসীর সংখ্যা কমাতে পারেনি। তাই বছরের এই দিনটিতেই সুন্দরবনের জলজঙ্গলে অনাহারে অবহেলায় বেড়ে ওঠা বাচ্চাদের মুখে খাবার তুলে দিলেন বাহিনীর সদস্যরা। গোটা দুপুর সুন্দরবন এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে পথশিশুদের মধ্যে খাবার বিলি করা হল। মেনুতে ছিল পোলাও ও আলুরদম। কোনওদিন আধপেটা কোনওদিন তাও জোটে না। কখনও বড় বড় দোকানের ডাস্টবিন থেকে খাবার খুঁজে নেওয়া, এভাবেই চলে দিন। অভাবের তাড়নায় বাবা-মাও সেভাবে যত্ন নিতে পারেন না। তাই অবহেলায় কাটে শৈশব। রুক্ষ চুলের খড়ি ওঠা শীর্ণ হাতগুলি যখন খাবারের প্যাকেট নিতে বাড়িয়ে দেয়, তখন মুখে লেগে থাকে এক অপাপবিদ্ধ হাসি। ওই প্যাকেটের মধ্যেই যেন লুকিয়ে বসে রয়েছে সব পেয়েছির দেশ। সুগন্ধি পোলাওয়ের সঙ্গে আলুরদমের গন্ধ নিতে গিয়ে ছোট ছোট মুখে হাসি ফোটে। নিজেরাই ঝোল মেখে খেতে শুরু করে। স্বাধীনতা দিবসে অন্তত পেট ভরে খাক পথশিশুরা। এমনটাই ইচ্ছে ছিল রবিনহুড বাহিনীর। তাই এইদিনটিকে বেছে নেওয়া। জানালেন বাহিনীর সদস্য মঞ্জুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘প্রায় দিন সুন্দরবনের দুঃস্থ বাচ্চাদের মুখে আমরা খাবার তুলে দিই। আজ বিশেষ দিন, গোটা দেশ ৭২-তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করছে ধুমধামের সঙ্গে। এই পথশিশুরা স্বাধনীতা দিবসের মর্ম বোঝে না। ভাগ্য ওদের সেই গৌরবান্বিত ইতিহাস বোঝার সুযোগ দেয়নি। কিন্তু দেশের স্বাধীনতা দিবসে ওদের সঙ্গে সৌভাগ্য না থাক, এক থালা ভাত তো থাকুক।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.