কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরীর খুনের মামলায় দোষী সুশান্ত চৌধুরীকে ফাঁসির সাজা (Death Penalty)দিল বহরমপুরের আদালত। বৃহস্পতিবার বহরমপুর তৃতীয় দ্রুত নিষ্পত্তি আদালতের বিচারক সন্তোষ কুমার পাঠক আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিলেন। এদিনও দোষী সুশান্ত চৌধুরী ক্ষমা চেয়ে নেয় বিচারকের কাছে। জানায়, বহু কষ্ট করে সে পড়াশোনা করেছে, সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। কিন্তু তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি। বিচারক ফাঁসির সাজাই দেন।
বৃহস্পতিবার সুতপা চৌধুরী হত্যাকাণ্ডের রায় শুনতে আদালত ছিল ভিড়ে ঠাসা। গত ২০২২-এর ২ মে বহরমপুরে (Baharampur) একটি মেস বাড়ির সামনে কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে মেরে খুন করে তাঁর প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরী। ৪২ বার ছুরি দিয়ে কোপানো হয় সুতপাকে। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে। মঙ্গলবার সুশান্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। আর বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা হল।
এদিন সুশান্তর আইনজীবীর তরফে আবেদন করা হয় এই মর্মে, “আমার মক্কেল এক জন মেধাবী ছাত্র। তাঁর বৃহত্তর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অন্ততপক্ষে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রার্থনা করেছিলাম। মহামান্য আদালত তাঁর মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছে। রায়ের কপি পাওয়ার পর মক্কেলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
সুতপার পরিবারের দাবি, শুধু মেয়েকে খুন করাই নয়, একাধিক অপরাধ করেছে সুশান্ত। উভয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তা ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই সুতপার উপর মানসিকভাবে অত্যাচার করা হতো। খুনের পর মেসের পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টা করলেও পরদিন সামশেরগঞ্জ থেকে সুশান্ত গ্রেপ্তার হয়। কিন্তু তারপরও নানাভাবে মিথ্যে বয়ান দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু সুতপার শরীরে যেভাবে ছুরি দিয়ে সে উপুর্যপরি আঘাত করেছিল, তাতেই স্পষ্ট, প্রেমিকার প্রতি কতটা প্রতিশোধ পরায়ণ ছিল সুশান্ত। এমনই বলছে পুলিশ। ফলে কঠোরতম সাজা পাওয়াই উচিত বলে মনে করে সুতপার পরিবার, বন্ধুরা। বৃহস্পতিবার ‘খুনি’ সুশান্তকে আদালত ফাঁসির সাজা শোনানোয় খানিকটা সান্ত্বনা পেয়েছে সুতপার পরিবার। তবে নিম্ন আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করতে পারেন সুশান্তর আইনজীবী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.