ছবি: প্রতীকী
দীপঙ্কর মণ্ডল: ১২ মাসে ১৩ মাসের বেতন! গত আর্থিক বছরে জেলার স্কুল শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এমনটাই হয়েছে। তবে তাতে খুশি হওয়ার থেকে মন খারাপই হয়েছে সকলের। উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে। কিন্তু কেন?
আসলে বাড়তি আয়করের আওতায় পড়ার ভয় কাজ করছে প্রতিনিয়ত। যাঁদের কোনও আয়কর দিতে হত না, তাঁদেরও দায়ভার চেপেছে। যাঁরা আয়করের নিচের স্ল্যাবে ছিলেন, তাঁদের একটি অংশ অতিরিক্ত বেতনের গেরোয় পরের স্ল্যাবে চলে গিয়েছেন। প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা বাড়তি আয়কর দিতে হচ্ছে কাউকে কাউকে।
করোনার জেরে মার্চে বেতনের অর্ডার ট্রেজারি বেশ কিছুটা আগেই ছেড়ে দিয়েছে। এর ফলে, মার্চে কিছু জেলার শিক্ষকদের অ্যাকাউন্টে দু’বার করে বেতন ঢুকে গিয়েছে। কেউ ২৯ মার্চ, কেউ ৩০ বা ৩১ মার্চ বেতন পেয়েছেন। তাঁরা পয়লা বা ২ মার্চও বেতন পেয়েছিলেন। যে বেতন তাঁরা পরের অর্থবর্ষ অর্থাৎ এপ্রিলে হাতে পেতেন, সেটা আগের অর্থবর্ষে চলে এসেছে। ফলে বেড়ে গিয়েছে করের পরিমাণ। পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া এবং বীরভূমে এই কাণ্ড হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর বাদে বাঁকুড়া-সহ অন্যত্র এই সমস্যা মিটে গিয়েছে। বাঁকুড়ার ডিআই অফিসের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রধান শিক্ষকদের বলা হয়েছে, ১২ মাসের বেতন ধরেই শিক্ষকদের আয়ের হিসাব করতে হবে। এক মাসের বাড়তি বেতনের জন্য করবাবদ কেটে নেওয়া ট্যাক্স রিটার্ন ফাইল করলেই ফেরত পাওয়া যাবে। পূর্ব মেদিনীপুর এবং বীরভূমও সেই পথে হাঁটছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে সমস্যা এখনও মেটেনি। অভিযোগ, ডিআই অফিসে ঠিক করে দেওয়া নির্দিষ্ট ট্যাক্স কনসালট্যান্টদের কাছেই তাঁদের যেতে হচ্ছে। আর তাঁরা ১৩ মাসের বেতনের উপর আয়কর প্রদানের পক্ষেই সওয়াল করছেন।
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির বক্তব্য, এই সমস্যা যে হতে পারে তা আগেই ডিআইয়ের কাছে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তখন সেটাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এখন সমস্যাটা বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। স্কুলশিক্ষা ডিরেক্টরেটের গ্র্যান্ট-ইন-এড সেকশনেও অভিযোগ জানিয়েছে এই সংগঠন। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিআই বলেন, সমস্যাটা শুধু এই জেলায় নয়, গোটা রাজ্যে হয়েছে। আলোচনা করে একটি রফাসূত্র খোঁজার চেষ্টা চলছে। শিক্ষক সংগঠন বিজিটিএ-র সাধারণ সম্পাদক সৌরেন ভট্টাচার্য বলেন, “বাঁকুড়া-সহ কয়েকটি জেলায় সমস্যার রফাসূত্র বেরিয়েছে। সমস্যা সহজেই ডিআই অফিস মিটিয়ে ফেলতে পারে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.