দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: জাদু ছিল প্রাণ। সেই জাদু দেখাতে গিয়েই ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছেন সোনারপুরের ‘ম্যানড্রেক’ চঞ্চল লাহিড়ী। তারপর একদিন পেরিয়েছে। কিন্তু এখনও হদিশ মেলেনি তাঁর। প্রবল উৎকন্ঠা নিয়ে ‘ম্যানড্রেকে’র অপেক্ষায় পরিবারের সদস্যরা। শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা।
রবিবার থেকেই থমথমে সোনারপুরের সুভাষগ্রামের চণ্ডীতলা এলাকা। বাড়ির বাইরে প্রতিবেশীদের আনাগোনা। সকলেই চঞ্চলের অপেক্ষায়। খবর পাওয়ার পর থেকেই বারান্দায় বসে জাদুকরের মা। কান্না ভেজা গলায় তিনি বলেন, “ছোট থেকেই জাদু নেশা ছিল চঞ্চলের। বয়স বাড়তে নেশাকেই পেশা বানিয়ে ফেলেছিল। কখনও হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটা, কখনও আবার চোখ বেঁধে বাস চালানো। জাদুবলে সকলের মন জয় করেছিলেন চঞ্চল।” জানা গিয়েছে, ১৯৯৮ সালে বাক্সবন্দি অবস্থায় গঙ্গায় ডুব দিয়েছিলেন চঞ্চল। ফিরেও এসেছিলেন। এরপরই শহরজুড়ে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে৷ তারপর থেকেই জাদুবলে লোকের মন ভোলাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরেছেন তিনি। সুনামও অর্জন করেছেন। বর্তমানে সোনারপুরের বাড়িতে মা, স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে সংসার চঞ্চলবাবুর।
রবিবার দুপুর পৌনে একটা নাগাদ চঞ্চল লাহিড়ী ফেয়ারলি ঘাট থেকে লঞ্চে ওঠেন৷ ২৮ নম্বর পিলারের কাছে লঞ্চ থেকে ঝাঁপ দেন তিনি৷ পরিকল্পনা ছিল, তাঁর হাত-পা-মুখ বাঁধা থাকবে৷ হাওড়া ব্রিজে থাকা ক্রেন দিয়ে তাঁকে লঞ্চ থেকে প্রথমে তোলা হবে৷ তারপর ওই ক্রেন থেকেই গঙ্গায় ছুঁড়ে ফেলা হবে৷ সেখান থেকে তিনি নিজেই উঠে আসবেন৷ কিন্তু গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়ার পর আর উঠতে পারেননি তিনি। এই ঘটনার পর থেকে শান্ত হয়ে গিয়েছে চঞ্চলবাবুর ছেলে দুর্জয়। স্কুলপড়ুয়া ছেলের কথায় আতঙ্ক স্পষ্ট। বাবা না ফিরলে কী হতে পারে তা ভেবেই আঁতকে উঠছে দুর্জয়। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, “উনি খুব মিশুকে মানুষ, জাদুকর বলে সবাই তাঁকে একডাকে চেনে।” এখন সকলের কামনা দ্রুত ফিরে আসুন চঞ্চল লাহিড়ী তথা সকলের ‘ম্যানড্রেক’।
ছবি: বিশ্বজিৎ নস্কর
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.