সম্যক খান, মেদিনীপুর: রাত পেরলেই সভা। তাই রবিবার সন্ধেয় সড়কপথে মেদিনীপুর শহরে পৌঁছলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর যাত্রাপথে রাস্তার দু’ধারে মানুষের ভিড় ছিল লক্ষ্য করার মতো। তৃণমূল নেত্রীর রাজনৈতিক সভাকে ঘিরে মেতে উঠেছে গোটা মেদিনীপুর। ফ্লেক্স ও দলীয় পতাকায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা শহরকে।
শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) নিয়ে টানাপোড়েনের মাঝে পশ্চিম মেদিনীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর এই জনসভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। হাইভোল্টেজ এই সভাকে ঘিরে যারপরনায় উৎসাহ ও উদ্দীপনায় মেতে উঠেছেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। রবিবারই মহম্মদ রফিকের নেতৃত্বে হাতিহলকায় বিশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। জেলার অন্যান্য প্রান্তেও হয়েছে মিছিল। মেদিনীপুর কলেজ ময়দানের সভাস্থলে সাজো সাজো রব। ডেকোরেটরের প্রায় একশো কর্মী দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন।
করোনা পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে এবার মঞ্চের কিছুটা পট পরিবর্তন করা হয়েছে। এবার মূল মঞ্চ-সহ মোট তিনটি মঞ্চ হচ্ছে। মূল মঞ্চে থাকছে মাত্র সাতটি চেয়ার। যেখানে দলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়, মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, জেলা সভাপতি অজিত মাইতির মতো হাতে গোনা কয়েকজন ব্যক্তি থাকবেন। মূল মঞ্চের দু’পাশে প্রতিটি মঞ্চে থাকছে ৫০ টি করে চেয়ার। যার একটিতে থাকবেন বিধায়ক ও সাংসদরা। অন্যদিকে জেলা কর্মাধ্যক্ষ থেকে শুরু করে জেলা নেতারা। মাঠ যে উপচে পড়বে তা নিয়ে নিশ্চিত জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি। তাঁর কথায়, “দলনেত্রীর প্রথমে হেলিকপ্টারে আসার কথা ছিল। তাই হেলিপ্যাড করতে গিয়ে মাঠটিকে অনেকটা এগিয়ে আনতে হয়েছে। কিন্তু শেষমুহুর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে মুখ্যমন্ত্রী সড়কপথে মেদিনীপুর চলে এসেছেন।” তৃণমূল নেতাদের আক্ষেপ, হেলিপ্যাড না করলে আরও বহু মানুষ মাঠে ঢুকতে পারতেন। তবে বহু মানুষ মাঠে ঢুকতে পারবে না ভেবেই বহু দূর পর্যন্ত মাইক বাঁধা হয়েছে। যাতে তারা মাঠে ঢুকে দিদির দর্শন না পেলেও ভাষণ শুনতে পান।
অজিতবাবুর টার্গেট লক্ষাধিক জনসমাগম। বাস ও সবধরনের গাড়ি মিলিয়ে আগামিকাল প্রায় ৫ হাজার গাড়ি ঢুকবে মেদিনীপুর শহরে। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে মেদিনীপুরের এই জনসভা পৃথক মাত্রা পাচ্ছে দলের ভিতরে এবং বাইরেও। আয়োজনে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছেন না জেলা নেতৃত্ব। কেবলমাত্র মেদিনীপুর শহরেই সহস্রাধিক ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। প্রত্যেককে মাস্ক পরে আসতে বলা হয়েছে। মাস্ক না থাকলে প্রবেশপথে জনতার হাতে মাস্ক তুলে দেবেন তৃণমূলের স্বেচ্ছাসেবকরা। সভাস্থলকে কড়া নিরাপত্তার মোড়কেও মুড়ে ফেলেছে পুলিশ। পুলিশি নজরদারির পাশাপাশি থাকছে সিসিটিভি। সবমিলিয়ে প্রায় ৩০ টি ক্যামেরা সভাস্থলে লাগানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিকরা ইতিমধ্যে একাধিকবার সভাস্থল পরিদর্শন করে গিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.