রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: রসগোল্লা যুদ্ধে ওড়িশাকে হারিয়েছে বাংলা। সম্প্রতি রসগোল্লার ইতিহাস নিয়ে মুক্তি পেয়েছে বাংলা ছবিও। এবার আরও একটি রেকর্ড গড়তে পারে বাংলার এই মিষ্টি। পেল্লাই রসগোল্লা বানিয়ে তাক লাগাল হাতিপোতার পাঁচ বন্ধু। এক একটি রসগোল্লার ওজন দুই কেজি। হাতিপোতা মেলায় এই রসগোল্লার দাম রাখা হয়েছে এক হাজার টাকা। এর আগে এত ওজনের মিষ্টি বাংলার ইতিহাসে হয়েছে কিনা, তা নিয়েও ধন্দ তৈরি হয়েছে। হাতিপোতার মেলায় এই দৈত্যাকার রসগোল্লার খবর ছড়াতেই ভিড় বাড়তে শুরু করে। শীতের বাজারে নলেন গুড়ের এই রসগোল্লা এখন হাতিপোতার এই মেলার ইউএসপি। জিলিপি, পাঁপড়ভাজা ছেড়ে এই মিষ্টির দোকানেই ভিড় জমাচ্ছে মানুষ। এত দাম হলেও দেদার বিক্রি হচ্ছে ‘স্বাদের’ রসগোল্লা।
পরিমাণ মতো ছানা ও নলেনগুড়ের পাকে দৈত্যাকার রসগোল্লা তৈরি করেছে স্থানীয় বাসিন্দারাই। ১৯ বছর আগে হাতিপোতার এই প্রাঙ্গণে মেলার সূচনা হয়। সেবার স্থানীয় ময়রা ভাড়া করে এখানে একটি মিষ্টির দোকান দেন পাঁচ বন্ধু হবিরুল মণ্ডল, জায়িরুল মোল্লা, সফের শেখ, নাজির মণ্ডল, মহাবত শেখ। তারপর ময়রার থেকে মিষ্টি বানানো শিখে নিজেরাই দোকান দেওয়া শুরু করেন। পেশাদার মিষ্টি ব্যবসায়ী নন। কিন্তু এই মেলাকে ভালবেসে বারবার মিষ্টির দোকান দেন। এবারও সেভাবেই মেলাতে মিষ্টির ডালি নিয়ে হাজির হন পাঁচ বন্ধু। এবার ভাবনা একটু আলাদা। গতবছর এক কেজি ওজনের একটি মিষ্টি বানিয়ে তাক লাগায় পাঁচ বন্ধু। যার দাম ছিল ৫০০ টাকা। এবার সেই ভাবনা থেকেই মিষ্টি বানানো শুরু করেন তাঁরা। ময়দা, ছানা ও নলেনগুড়ের সাহায্যে বানান ২ কেজি ওজনের পাঁচটি রসগোল্লা। এর মধ্যে দুদিনেই তিনটি রসগোল্লা বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও এক কেজির একটি রসগোল্লার দাম করা হয়েছে ৫০০ টাকা। আর পাঁচশো গ্রামের রসগোল্লার দাম ২০০ টাকা। ১০, ২০, ৩০ টাকারও রসগোল্লা আছে এবার। সঙ্গে আছে স্পঞ্জের রসগোল্লাও।
মেলার আকর্ষণ ধরে রাখার জন্য সব আইটেম বিক্রি করেননি। এখনও মেলার অনেকদিন বাকি। হাবিবুল বলেন, এতে তাঁরা কোনও রকম ভেজাল মেশান না। স্বাদও ঠিক অবিকল একই রকম। এই বছর এত বড় আকারের রসগোল্লা কিনে জনপ্রিয় হয়েছেন গ্রামের যুবক রেজাই ইসলাম মোল্লা। তিনি বলেন, “বাড়ির ছোটরা আগে এত বড় রসগোল্লা দেখেনি। তাই খাওয়ার থেকে দেখানোর জন্যই বেশি বিক্রি হচ্ছে। বন্ধু বা পরিজনকে উপহারও দেওয়ার জন্যও কেনা হয়েছে।” মেলা উদ্যক্তাদের মধ্যে আরজেদ শেখ বলেন, “গত বছরই আমাদের পশ্চিমবঙ্গ রসগোল্লার আইডেন্টিটির লড়াইয়ে ওড়িশাকে হারিয়েছে। তাই রসগোল্লা নিয়ে বাঙালির আবেগ সবসময় ছিল। এটাই আমাদের মেলাকে আরও জমজমাট করেছে।”
ছবি: মোহন সাহা
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.