বাড়ির সামনে প্রতিবেশীদের ভিড়। নিজস্ব ছবি।
অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: বন্ধ ঘর থেকে মা ও দুই সন্তানের মৃতদেহ। শনিবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল হাওড়ার বাঁকড়ায়। জানা গিয়েছে, দক্ষিণ পল্লির ওই বাড়িতে বৃদ্ধা এবং তাঁর দুই ছেলেমেয়ে থাকতেন। মেয়ে বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন, ছেলে চাকরিজীবী। পরিবারটি দিন কয়েক দেনাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। যার জেরে টানাপোড়েন চলছিল। সেই কারণেই কি আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন সকলে? নাকি পাওনার জন্য তাঁদের খুন করা হয়েছে? উঠছে এই প্রশ্ন। বাঁকড়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। সেই রিপোর্ট পেলে অনেক কিছুই স্পষ্ট হবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
জানা যাচ্ছে, বাঁকড়ার দক্ষিণ পল্লিতে বাড়ি বয়স্কা শেফালি ঘলোইয়ের। সেখানেই থাকতেন বিশেষভাবে সক্ষম মেয়ে সঙ্গীতা ও ছেলে শুভময়। তিনি পূর্তদপ্তরের অস্থায়ী কর্মী। শুভময়ের আয় থেকেই সংসার চলত। কিন্তু প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি শুভময় ধারদেনায় জড়িয়ে পড়েন। বাড়িতে পাওনাদারদের আনাগোনা লেগেই থাকত। কিন্তু শনিবারের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, দুপুর ১২টা থেকে এই বাড়ির সমস্ত দরজা-জানলা বন্ধ ছিল। সন্ধ্যার পরও সেসব বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করেন তাঁরা। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। তখন তড়িঘড়ি বাড়ির দরজা ভেঙে ঢোকেন প্রতিবেশীরা। দেখেন, মেঝেতে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন শেফালিদেবী, শুভময় ও সঙ্গীতা। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। তাঁদের তিনজনকে দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা তিনজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বাঁকড়া থানার পুলিশ পরিবার সম্পর্কে জানতে প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, বিষক্রিয়ায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে না। প্রতিবেশীদের প্রশ্ন, তবে কি দেনার দায়েই পুরো পরিবার আত্মঘাতী হল? আবার অনেকের আশঙ্কা, পাওনাদারদের হাতে খুনও হতে পারেন মা ও দুই সন্তান। কারণ যাই হোক, আচমকা এমন ঘটনায় হতভম্ব দক্ষিণ পল্লির বাসিন্দারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.