সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: জিভে ক্যানসার। দ্রুত চিকিৎসা শুরু না হলে বাড়বে যন্ত্রণা। কিন্তু লকডাউনে মেয়ে-জামাই দিল্লিতে আটকে থাকায় অর্থের কোনও জোগান নেই। কি হবে ভবিষ্যৎ, এই নিয়ে যখন প্রবল দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন ওই মুসলিম বৃদ্ধা ঠিক সময় পাশে দাঁড়াল ৩ হিন্দু যুবক। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অন্য ছবি দেখা গেল দুর্গাপুরের কাঁকসায়।
দুর্গাপুরের কাঁকসার বাসিন্দা মালেকা বেগম। বেশ কিছুদিন ধরেই কাঁকসা হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। ক্যানসার আক্রান্ত মালেকা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতির পরামর্শ দেন ডাক্তাররা। অবিলম্বে স্থানান্তর না করা হলে যন্ত্রণা আরও বাড়বে বলে জানান তাঁরা। কিন্তু কীভাবে যাবেন? কাঁকসা থেকে বর্ধমান যেতে গাড়ি মিলবে কোথায়? নেই অর্থও। মেয়ে-জামাই লকডাউনে আটকে থাকায় অর্থের জোগানও নেই। বাধ্য হয়ে সাহায্যের জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হন ওই বৃদ্ধার ছেলে। তাতে মৌখিক আশ্বাস মিললেও আদতে কোনও লাভ হয়নি।
এই খবর পেয়েই মালেকা বেগমের চিকিৎসার জন্য এগিয়ে এলে এক খবরের কাগজের হকার, ট্যাঙ্কার চালক ও বেসরকারি হাসপাতালের এক কর্মী। বৃদ্ধাকে বর্ধমান হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন নিতাই দাস, দিলীপ বাউরি, ও বাদল। গাড়ি থেকে অর্থ সবকিছুর ব্যবস্থা করার পর পুলিশের দ্বারস্থ হন তাঁরা। অবশেষে মেলে অনুমতি। সোমবারই বাদলের গাড়িতে বর্ধমান মেডিক্যালে যাবেন মালেকা বেগম। পেট্রোলের অর্থ দিয়েছেন দিলীপ। আর সামান্য উপার্জনের থেকেই কিছু নগদ টাকা বৃদ্ধার হাতে তুলে দেন নিতাই। এই তিন যুবকের প্রার্থনা, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক হতদরিদ্র মালেকা। আর মালেকার কাছে এই তিনজন আল্লার পাঠানো দূত। তাই ওঁদের মঙ্গল কামনা করে চলেছেন ক্যানসার আক্রান্ত মালেকা। এই তিন যুবকের মানবিকতায় মুগ্ধ সকলেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.