শেখর চন্দ্র, আসানসোল: আবর্জনা ফেলাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল আসানসোল পুরনিগমের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে। ঘটনার জেরে তৃণমূল কাউন্সিলরের সঙ্গে কংগ্রেস নেতার হাতাহাতি বাঁধে। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা প্রসেনজিৎ পুইতুন্ডিকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূল কাউন্সিলর অনিমেষ দাসের বিরুদ্ধে। কাউন্সিলের পালটা দাবি, “আমাদের লোকদের মারধর করা হয়েছে।”
ঘটনাটা ঠিক কী? ওই ওয়ার্ডের একটি আবাসনের বাইরে দীর্ঘদিন ধরে আবর্জনা জমে ছিল। পরিষ্কার না করার অভিযোগ তুলে আবাসনের বাসিন্দারা সেই আবর্জনা তুলে সামনের রাস্তায় ফেলে দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান অনিমেষ দাস। সেখানে ওই আবাসনের বাসিন্দা তথা কংগ্রেস নেতার সঙ্গে বচসা বাঁধে। তা হাতাহাতির আকার নেয়।
আবাসনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুজোর আগের থেকে আবাসনের বাইরে আবর্জনা ফেলা হচ্ছিল। চায়ের দোকানের আবর্জনা থেকে মরা কুকুর, বিড়ালের দেহ সেখানে জমা হয়।এলাকার স্যানিটরি সুপারভাইজার ও পুরসভাকে বিষয়টি জানিয়েও লাভ হয়নি বলে দাবি। তাঁদের আরও অভিযোগ, এলাকার সুপারভাইজার পুজোর সময় আবর্জনা পরিষ্কার করার কথা বলে তাঁদের থেকে টাকা নেন। কিন্তু তা হওয়ায় বাধ্য হয়ে নিজেরাই আবর্জনা পরিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতিবাদে জঞ্জাল সামনের বড় রাস্তায় ফেলে দেন। আবাসনের এক বাসিন্দা রমাশংকর সিং বলেন, “তিন মাসের উপরে আবর্জনা এখানে পড়ে। বিষয়টি কাউন্সিলর, মেয়রকেও জানিয়েছি। কিন্তু কিছু কাজ হয়নি। এখানে মেডিক্যাল বর্জ্যও ফেলা হয়। আমরা বাধ্য হয়ে নিজেরাই পরিষ্কার করছি।”
ঘটনাস্থলে কাউন্সিলর যেতেই উত্তেজনা ছড়ায়। তৃণমূলের লোকেরা কংগ্রেস নেতাকে মারধর করে বলে অভিযোগ। কংগ্রেস নেতা প্রসেনজিৎ পুইতুন্ডি বলেন, “আমরা প্রতিবাদ জানানোর পর তৃণমূল নেতা তাঁর গুন্ডা বাহিনী নিয়ে আমাদের উপর চড়াও হন। সুপারভাইজার টাকা নেওয়ার পরও কেন এলাকা পরিষ্কার হয়নি? বলতেই ঝামেলা বাঁধে। কয়েকজন আমাদের উপর চড়াও হয়। আমাদের আবাসনের চেয়ারম্যানকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে। পায়ে আঘাত পেয়েছেন তিনি।”
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে স্থানীয় কাউন্সিলর অনিমেষ দাস বলেন, “এখানে আবাসনের আবর্জনা ফেলা হয়। পুরসভা তা পরিষ্কার করে। আজকে কিছু জমে থাকা ময়লা ওরা তুলে নিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। তাতে সবার অসুবিধা হয়েছে। ওরা ঝামেলা শুরু করে। আমাদের কয়েকজনকে মারে। তাঁরা আত্মরক্ষা তো করবেই।”
দীর্ঘদিন আবর্জনা পড়ে থাকার অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, “যদি স্যানিটরি সুপারভাইজার কাজ না করেন তাহলে কাউন্সিলর, পুরসভাকে জানানো উচিত। তা না করে রাস্তায় আর্বজনা রাস্তায় ফেলে দেয় ওরা।” উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.