আকাশনীল ভট্টাচার্য, বারাকপুর: রবিবারের পর সোমবারও অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল বারাকপুর। এদিন বিজেপির বনধ ঘিরে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিজেপি-তৃণমূল। বারাকপুরের অন্যতম জনবহুল এলাকা নোনা চন্দনপুকুর বাজারের সামনের পথঘাট রীতিমতো রণক্ষেত্রের চেহারা নিল। রাস্তার মধ্যেই হাতাহাতি, ইটবৃষ্টি শুরু হয়। জখম বহু। ইটের গায়ে মাথা ফেটেছে অন্তত ৫ জনের। তাঁরা সকলেই বিজেপি কর্মী বলে দাবি
দলের। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় টিটাগড় থানা এবং বারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ আধিকারিকরা। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে জখম হয়েছেন টিটাগড় থানার আইসি এবং ডিসি ১।
সাংসদ অর্জুন সিংয়ের উপর হামলার প্রতিবাদে বারাকপুরে ১২ ঘণ্টা বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। সকাল থেকেই সেই বনধ সফল করতে বিজেপি কর্মীদের চেষ্টার অন্ত নেই। ভাটপাড়া, কাঁকিনাড়া এলাকায় রীতিমতো জোর করে দোকানপাট, ট্রেন চলাচল, অটো চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে, বনধ ব্যর্থ করতে পালটা পথে নেমেছেন তৃণমূল কর্মীরাও। ফলে দুপক্ষের সংঘর্ষ
অনিবার্যই হয়ে উঠছিল।
সোমবার বেলা বাড়তেই এই সংঘর্ষ, অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। সাড়ে দশটা নাগাদ বারাকপুরের অন্যতম জনবহুল এলাকা নোনা চন্দনপুকুরে বারাকপুর ব্রিজের বিজেপি কর্মীরা অবরোধ করতে গেলে বাধা দেয় তৃণমূল। তারপরই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীরা। ১৫ জন জখম হয়েছেন বলে খবর। এদের মধ্যে ৭ জনের আঘাত গুরুতর। সকলকেই ভরতি করা হয়েছে নিকটবর্তী হাসপাতালে।
উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঘোষপাড়া রোড, ওলাইচণ্ডী মন্দির-সহ একাধিক এলাকা। নতুন করে অশান্তির খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যায় টিটাগড় থানার পুলিশ। দুপক্ষের সংঘর্ষের মাঝে পড়ে জখম হন টিটাগড় থানার আইসি। তাঁকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালেও পুলিশকে ঘিরে চলে বিক্ষোভ। বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ কর্মী এবং বিজেপি সমর্থকরা। এলাকায়
মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
তবে পরিস্থিতি যে বেশ উদ্বেগজনক, তা কার্যত মেনেই নিচ্ছে পুলিশ। বিজেপির বনধ ঘিরে এলাকাজুড়ে আগাম সতর্কতা নেওয়া সত্ত্বেও কেন এমন ঘটনা ঘটল, এই প্রশ্ন উঠছে। অর্জুন সিংয়ের প্রভাবিত এলাকা ভাটপাড়া, কাঁকিনাড়ার বাইরে বারাকপুরের জনবসতিপূর্ণ এলাকায় গেরুয়া শিবিরের কর্মীদের এমন তাণ্ডব দেখে শিউড়ে উঠছেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। তাঁদের বক্তব্য, চোখের সামনে এমন রাজনৈতিক অশান্তি আগে
কখনও দেখা যায়নি। রবিবার থেকে ঘটনা পরম্পরায় আতঙ্কে বারাকপুরবাসী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.