সৌরভ মাজি, বর্ধমান: কোটি টাকা দিয়ে পুরভোটে টিকিট কিনেছিলেন মেমারি পুরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলর ও এক নেতা! প্রকাশ্য সভায় এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন দলেরই এক নেতা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। বিরোধীরাও এই সুযোগে এক হাত নিয়েছে তৃণমূলকে।
শনিবার মেমারিতে কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী বিভিন্ন ইস্যুতে সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে তৃণমূলের মেমারি শহর সভাপতি স্বপন ঘোষাল-সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সেই সভাতেই তৃণমূলের মেমারি শহর সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি ফারুক আবদুল্লা চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন। মেমারির এক কাউন্সিলর ও এক নেতাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, “গত পুরসভা ভোটে ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে টিকিট কিনেছিলে। তোমার নেতাও ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে টিকিট কিনেছিল। আমরা সব জানি। দিঘার কোন হোটেলে রাত কাটাও সেটাও আমাদের জানা আছে।” এরপর অনুব্রত মণ্ডল ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) জেল যাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এনে ওই দুই নেতাকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ফারুক।
মেমারির এই তৃণমূল নেতার এই মন্তব্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। মেমারিতে সম্প্রতি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও সামনে এসেছে। বুথ সভাপতিদের নামের তালিকা প্রকাশের পর তা আরও বেশি করে প্রকট হয়েছে। এক কাউন্সিলর ওয়ার্ডের তৃণমূল কার্যালয় নতুন করে রং করে সাইবোর্ড পালটে কাউন্সিলর কার্যালয় করে দিয়েছেন তা নিয়েও চলছে দলের অন্দরে লড়াই। সেই প্রসঙ্গ টেনেও এদিনের সভা থেকে অন্য কয়েকজন তৃণমূল নেতা সোচ্চার হয়েছিলেন।
তৃণমূলের রাজ্যের মুখপাত্র দেবু টুডু ফারুক আবদুল্লার মন্তব্য প্রসঙ্গে বলেছেন, “এখন বিরোধী বলে তো কিছু নেই। এখন সবাই তৃণমূল। কে কোথায় কী বলে দিচ্ছে তা বোঝা মুশকিল। দল পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।” তৃণমূল সূত্রে খবর, শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছে অভিযোগ যে তুলছে তা প্রমাণ করার দায়িত্বও তারই। বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন, “তোলাবাজি, চুরি সবেতেই সিদ্ধহস্ত তৃণমূল। দলের প্রার্থী হতে উপর তলায় টাকা দিতে হয় এই দলে। ওদের নেতালাই তা জানিয়ে দিচ্ছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.