সৌরভ মাজি, বর্ধমান: অভিযোগ-পালটা অভিযোগ। হামলা-পালটা হামলা। সংঘর্ষ, প্রাণহানি। রাজনৈতিক মহলে এসব কিছুই যেন স্বাভাবিক। তবে ব্যতিক্রমও তো হয়। রাজনৈতিক মতভেদের ঊর্ধ্বে উঠে সৌজন্যের নজির গড়লেন এক তৃণমূল নেতা। করোনা আক্রান্ত বিজেপি (BJP) কর্মীর বাবার দেহ সৎকারে এগিয়ে এলেন তিনি। করলেন সমস্ত ব্যবস্থা। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও ওই তৃণমূল নেতাকে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি পদ্ম শিবিরের কর্মী।
পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের হাবাসপুর এলাকায় বাস ওই বিজেপি কর্মীর। সম্প্রতি তিনি করোনা আক্রান্ত হন। নিজের বাড়িতে নিভৃতবাসেই রয়েছেন তিনি। শুক্রবার আচমকাই ওই বিজেপি কর্মীর বাবা অসুস্থ বোধ করেন। মুহূর্তের মধ্যে বাড়িতেই মৃত্যু হয় তাঁর। এদিকে, মৃতের ছেলে কোভিড আক্রান্ত হওয়ায় গ্রামবাসীরা কেউই এগিয়ে আসেননি। ওই বিজেপি কর্মীর দাবি, বিপদের সময় দলীয় কর্মীদের বললেও তাঁরা পাশে দাঁড়াননি। এই খবর পান স্থানীয় পাঁচড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লালু হেমব্রম। আর তা পাওয়ামাত্রই তৎপর হয়ে ওঠেন তিনি। এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে নিজে উদ্যোগ নিয়ে বিজেপি কর্মীর বাবার দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করেন।
বিজেপি কর্মীর পরিজনরা জানান, “মৃত্যুর পর বিজেপি কর্মী বা গ্রামের কারও সাহায্য পাইনি। সেই সময় ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ বা ‘ইয়াসে’র (Cyclone Yaas) জন্য পঞ্চায়েতের যে হেল্পলাইন নম্বর রয়েছে তাতে ফোন করে বিস্তারিত জানাই। এরপরই প্রধান, উপপ্রধান-সহ অন্য পদাধিকারীরা এগিয়ে আসেন। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের পদাধিকারীরা এগিয়ে এসে দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করেন।” করোনা কালে সকলেই ঘরের দরজা এঁটেছেন। রয়েছেন দূরে দূরে। এই পরিস্থিতিতে করোনা আক্রান্ত বিজেপি কর্মীর বাবার দেহ সৎকারে এগিয়ে এসে তৃণমূল নেতা যে সৌজন্যের নজির গড়েছেন সে ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। তাই মৃতের পরিবারের তরফে প্রধান ও অন্য পদাধিকারীদের ধন্যবাদও জানানো হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.