চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: করোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন গোটা দেশ। অত্যন্ত জরুরি কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে পা রাখা নিষেধ। সাতজনের বেশি কোথাও জমায়েত মানে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। জমায়েত, ভিড় রুখতে পুলিশও অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে সর্বত্র। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও বারবার রাজ্যবাসীকে ঘরে থাকার কথা বলছেন।
এমনই আবহে ঠিক উলটো ছবি দেখা গেল আসানসোলে। সেখানকার তৃণমূল কাউন্সিলর আখতার হোসেন সকলকে বেশি বেশি করে নমাজ পড়ার আহ্বান জানালেন। তাঁর এই ভিডিও বার্তা ঘিরে শুরু বিতর্ক। বার্তা পেয়েই বুধবার রাতে এলাকায় জমায়েত হয়ে মানুষজন প্রার্থনায় শামিল হয়েছেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য দলের নেতার এই বক্তব্যের দায় নিতে নারাজ।
আসানসোল পুরনিগমের ৬৫ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর আখতার হোসেন। এমনিতে এলাকায় জনপ্রিয়। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তাঁর ভূমিকা প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। করোনা সংক্রমণ রুখতে প্রশাসনের তরফে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সকলকে গৃহবন্দি থাকার আবেদন জানানো হয়েছে। নিয়ম ভেঙে বাইরে বেরনো জনতাকে বোঝানোর ভার শুধু পুলিশের উপর নয়, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃত্বকেও সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই অবস্থায় আখতার হোসেন ভিডিও বার্তায় আবেদন করলেন, করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে যত বেশি পারেন, আজান দিন। এরপরই সন্ধেবেলা দেখা যায়, তিনি যে এলাকায় থাকেন, সেই কুলটিতে বহু মানুষ জমায়েত করে প্রার্থনা করছেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তৃণমূল নেতার এই বার্তা নিয়ে যথারীতি বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। অবশ্য দলের নেতার এমন বক্তব্যের দায় নিতে নারাজ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব, তথা আসানসোল পুরনিগম কর্তৃপক্ষ। আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই বক্তব্য পুরোপুরি আখতার হোসেনের ব্যক্তিগত। এর সঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষ বা তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। তারা এ ধরনের বক্তব্য সমর্থনও করে না। প্রশ্ন উঠছে আরও, যেখানে দলনেত্রী বারবার জনগণকে সচেতন করছেন, নিজে পথে নেমে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন, সেখানে তাঁর দলের নেতার এই ভূমিকা কেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.