ধীমান রায়, কাটোয়া: লোকসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই বিজেপির হামলার আশঙ্কায় গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান। মাসাধিককাল পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের রামনগর পঞ্চায়েতের প্রধান সঞ্জিত বিশ্বাস তার দুই সন্তানকে নিয়ে আত্মগোপন করেছিলেন। মঙ্গলবার আউশগ্রাম ২ বিডিওর কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে তিনি গ্রামে ফিরলেন। সূত্রের খবর, প্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়ার শর্তেই বাড়ি ফিরতে পেরেছেন সঞ্জিতবাবু। শুধু প্রধানের পদ থেকেই নয়, পঞ্চায়েত সদস্যের পদ থেকেও তিনি ইস্তফা দিতে ইচ্ছাপ্রকাশ করে আবেদন করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে আউশগ্রামের ছোড়া কলোনিতে বাড়ি রামনগর পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জিত বিশ্বাসের। তিনি বিত্তবান ব্যবসায়ী বলে পরিচিত। রয়েছে একাধিক বাস, লরি, বালিতোলার যন্ত্র। এছাড়া একাধিক বালিঘাটও চালাতেন বলে জানা গিয়েছে। গত ২৩ মে রাত থেকে তিনি এলাকাছাড়া হয়ে গিয়েছিলেন। সঞ্জিতবাবু জানিয়েছেন, ভোটের ফল ঘোষণার পরে কয়েকজন হিতাকাঙ্খী তাঁকে সতর্ক করেছিলেন তিনি বিজেপির হাতে আক্রান্ত হতে পারেন। সেদিন রাতেই ছেলে ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে লুকিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে গোপন ডেরায় আশ্রয় নেন সঞ্জিতবাবু। তারপর থেকে পঞ্চায়েত প্রধানের চেয়ার ফাঁকাই পড়ে ছিল।
মঙ্গলবার আউশগ্রাম ২ বিডিওর কাছে সঞ্জিত বিশ্বাস তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দেন। তাতে তিনি পদত্যাগের কারণ হিসাবে যদিও শারীরিক অসুস্থতা ও পারিবারিক সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন। তবে সূত্রের খবর প্রধান ও সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার শর্তেই স্থানীয় কয়েকজনের মধ্যস্থতায় তিনি বাড়ি ফিরেছেন। সঞ্জিত বিশ্বাস অবশ্য বলেন, ” আমার ওপর কেউ চাপ সৃষ্টি করেনি। আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছি। দলের নেতৃত্বকে জানিয়েছিলাম। তারা আমাকে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি।”
আউশগ্রাম ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি রামকৃষ্ণ ঘোষ অবশ্য বলেন, ” আমার কাছে এধরনের খবর নেই। খবর নিচ্ছি।” বিজেপির ব্লক নেতা দেবব্রত মণ্ডল বলেন, ” আমরা কাউকে ইস্তফার জন্য চাপ দিইনি। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলিতে যে হারে দুর্নীতি হয়েছে, শাসকদলের নেতারা সাধারণ মানুষের কাছে কাটমানি আদায় করেছে, সেসব জনতা ধরে ফেলেছেন। তাই জনরোষ থেকে বাঁচতে প্রধানের সরে যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না।” আউশগ্রাম ২ বিডিও সুরজিৎ ভর বলেন, ” রামনগর পঞ্চায়েত প্রধান আমার কাছে প্রধানের পদ থেকে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাকে সাতদিনের সময় দেওয়া হবে। নোটিস করে ডাকার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
ছবি: জয়ন্ত দাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.