দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: নতুন প্রকল্পের সূচনাতেই তৃণমূল শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। ‘বাংলার গর্ব মমতা‘, এই প্রচার কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ থাকা সত্বেও ডাক পেলেন না ক্যানিংয়ের জনপ্রতিনিধিরা। আর তার জেরে বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল বিরুদ্ধে ক্ষোভ দেখান তাঁরা। যার জেরে দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ক্যানিং থেকে চুনাখালি-গদখালি-ঝড়খালি যাওয়ার রাস্তা।
আসন্ন পুরসভা এবং একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ২ মার্চই সূচনা হয়েছে তৃণমূলের নতুন প্রচার কর্মসূচি – ‘বাংলার গর্ব মমতা’। নির্ধারিত সময় মেনে আজ থেকেই শুরু হয়েছে সূচি মেনে কাজ। আর শুরুতেই ঘটল বিপত্তি। ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল ডাকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হলেন না সেখানকার চারটি পঞ্চায়েতের প্রধান, একাধিক পঞ্চায়েত সদস্য, জেলা পরিষদের দুই সদস্য-সহ বহু জনপ্রতিনিধি।
শনিবার সকালে তাঁরাই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দেন স্থানীয় মানুষজনও। এমনকী শ্যামল মণ্ডলকে ‘বহিরাগত’ বলেও দাবি করেন। রাস্তা অবরোধের জেরে যান চলাচল ব্যাহত হয় প্রায় আড়াই ঘণ্টা। ক্যানিং-বারুইপুর রোড অবরুদ্ধ থাকায় ক্যানিং থেকে চুনাখালি, গদখালি, ঝড়খালির সমস্ত রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।কয়েক ঘন্টা ধরে অবরুদ্ধ হওয়ার কারণে সমস্যায় পড়ে নিত্যযাত্রী থেকে সুন্দরবনে বেড়াতে আসা পর্যটকরা। দোলের ছুটির জন্য পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে সুন্দরবনের। বেশ কিছু গাড়ি এদিন সকাল থেকে আটকে পড়ে ক্যানিং বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এলাকায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশের হস্তক্ষেপে জট কাটে। স্বাভাবিক হয় যান চলাচল।
এদিনের কর্মসূচিতে বাদ পড়েছিলেন মাতলা ১ ও মাতলা ২, দিঘিরপাড় এবং নিকারিঘাটা পঞ্চায়েতের প্রধানরা, বাদ পড়েন জেলা পরিষদের দুই সদস্য-সহ প্রায় ১০০ জন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি। মাতলা ১-এর প্রধান হরেন ঘোড়ুই বলেন, “বিধায়ক আমাদের কোনও অনুষ্ঠানে ডাকেন না। দলীয় নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে না ডাকার জন্যই এই বিক্ষোভ কর্মসূচি।” স্থানীয় নেতারাও অনেকে অভিযোগ তোলেন যে এই বিধায়ক ‘বহিরাগত’। এঁকে নির্বাচনে টিকিট দেওয়া যাবে না। এ নিয়ে বিধায়ক শ্যামল মণ্ডলের পালটা দাবি, “যে সমস্ত দলীয় কর্মীরা ‘পুরনো কর্মী’ বলে দলের মধ্যে পরিচিত, তাঁদেরকে খুব শীঘ্রই উপস্থিত করা হবে অন্য আরেকটি অনুষ্ঠানে। সেই জন্য আমরা আজকের অনুষ্ঠানে এঁদের ডাকিনি। আমি সপ্তাহে প্রায় সাতদিন ক্যানিংয়ে পড়ে থাকি। কাজেই আমি ‘বহিরাগত’, এই অভিযোগ ঠিক নয়।” তবে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ অনুষ্ঠানের প্রথম দিনই ক্যানিংয়ের তৃণমূল নেতৃত্ব অন্তর্দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ায় প্রচার কর্মসূচি কিছুটা হলেও ধাক্কা খেল বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.