শাহাজাদ হোসেন, ফরাক্কা: দীর্ঘদিন বেপাত্তা থাকার পর বৃহস্পতিবার রাতে ছোট মাসির বাড়ি থেকে জেএমবির অন্যতম পাণ্ডা আবদুল করিমকে গ্রেপ্তার করেছে এসটিএফ। কিন্তু এখনও পরিবারের সদস্যরা মানতে নারাজ যে, কঠোর পরিশ্রমী আবদুল এহেন কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত। ফাঁসানো হচ্ছে আবদুলকে, দাবি তাঁদের।
জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের চাঁদনিদহ এলাকার বাসিন্দা আবদুল করিম। স্থানীয় কৃষ্ণপুর হাইস্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে সে। এরপর যোগ দেয় ইটভাটায়। সেখানে ট্রাক্টর চালাত সে। সেই কাজ করার সময়ই পারভিনা বিবিকে বিয়ে করে আবদুল।
এরপর গ্রামে একটি গ্রিলের দোকান দেয়। লোকসান হওয়ায় সেই ব্যবসাও টেকেনি। এরই মাঝে বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে নাম জড়ায় আবদুলের। গভীর রাতে তার বাড়িতে হানা দেয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। টের পেয়েই পিছনের দরজা দিয়ে ঘর ছাড়ে সে। সেই থেকেই চলছে পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি। এরপর দীর্ঘ আড়াই বছর পর মুর্শিদাবাদের সুতিতে মাসির বাড়ি থেকে এসটিএফের জালে ধরা পড়ল আবদুল। কিন্তু এর মাঝের দীর্ঘ সময় কোথায় ছিল জেএমবির ধুলিয়ান মডেলের প্রধান আবদুল করিম?
জানা গিয়েছে, সেই রাতে ঘর ছাড়ার পর কর্ণাটকে পাড়ি দিয়েছিল আবদুল। কোনওরকম যোগাযোগ করেনি পরিবারের সঙ্গে। এরপর করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন চালানো হচ্ছে জেনেই মুর্শিদাবাদ ফেরার ছক কষে সে। শ্রমিক পরিচয়ে ট্রেনে চেপে পৌঁছে যায় ফরাক্কা। সেখানে ঘোরাঘুরি করে বৃহস্পতিবার সুতির কাশিমপুরে মাসির বাড়িতে গিয়েছিল আবদুল। সেটাই কাল হল তার কাছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানে হানা দিতেই পুলিশের জালে ধরা পড়ল আবদুল। ধৃতের কাছ থেকে বেশ কিছু সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আবদুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই ধুলিয়ান মডেলের সম্পূর্ণ তথ্য ও এর সঙ্গে জড়িতদের হদিশ পাওয়ার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু, ছিমছাম জীবন থেকে কীভাবে জঙ্গিগোষ্ঠীর মাথা হয়ে উঠল আবদুল? সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সকলের মনে। যদিও পরিবারের দাবি, ধৃতের সঙ্গে জেএমবির কোনও যোগ নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.