ধীমান রায়, কাটোয়া: বিবাহিত জীবন সুখের হয়নি। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ফের বাপেরবাড়িতেই ফিরে আসতে হয়েছিল। কিন্তু সেখানেও জুটেছিল অবহেলা। স্রেফ আত্মহত্যা করার জন্য বর্ধমান থেকে রেললাইন ধরে পায়ে হেঁটে কাটোয়ায় এসেছিলেন বছর আঠাশের এক তরুণী। কিন্তু, কথায় বলে না ‘রাখে হরি, মারে কে!’ বাস্তবে তেমনটাই ঘটল। গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে ওই তরুণীকে বাঁচালেন দুই কলেজ ছাত্রী।
কাটোয়া শহরের ঘুটকেপাড়া এলাকায় বাড়ি ডালিয়া খাতুন ও মেহেরুন্নেসা খাতুন।সম্পর্কে তাঁরা তুতো বোন। শনিবার সন্ধ্যায় শহরের কালীবাড়ি ঘাটের কাছে বসে গল্প করছিলেন দুই বোন। তখন ঘাটে বসেছিলেন আরও অনেকেই। সন্ধ্যার মুখে আচমকাই কয়েকজনের চিৎকার শোনা যায়। বাকি সকলের সঙ্গে নদীর পাড়ে ছুটে যায় ডালিয়া ও মেহেরুন্নেসা। তাঁরা দেখেন, নদীর জলে তলিয়ে যাচ্ছেন এক মহিলা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথমে নদীতে ঝাঁপ দেন মেহেরুন্নেসা। দিদিকে দেখে আরও স্থির থাকতে পারেননি ডালিয়াও। তিনি নদীতে ঝাঁপ দেন।যে মহিলা তলিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁকে পাড়ে নিয়ে আসেন দু’জনে। প্রথমে ওই মহিলাকে নিয়ে যাওয়া হয় কাটোয়া থানায়। পুলিশ সহযোগিতায় তাঁকে ভরতি করা হয় কাটোয়া হাসপাতালে।
কিন্তু, মহিলার পরিচয় কী? কেনই তিনি নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন? পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার নাম শুভ্রা ঘোষ। বাড়ি বর্ধমানের ভিটা গ্রামে। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বছর দুয়েক আগে ডিভোর্স হয়ে যায় ওই তরুণীর। বিবাহবিচ্ছেদের পর বর্ধমানের দেওয়ানদিঘির মির্জাপুরে বাপেরবাড়িতে ফিরে যান শুভ্রা। মা লোকের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন আর ভাই গাড়ি চালান। শুভ্রার অভিযোগ, বাপের বাড়িতে ঠিকমতো খেতে পান না তিনি। চরম অবহেলায় দিন কাটে। আত্মহত্যা করার জন্য শনিবার বর্ধমান থেকে রেললাইন ধরে হেঁটে কাটোয়া আসেন ওই তরুণী। বিকেলে কাটোয়ায় পৌঁছেই গঙ্গা ঝাঁপ দেন শুভ্রা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.