দীপঙ্কর মণ্ডল: ‘কুৎসিত’ বোঝাতে কৃষ্ণাঙ্গের ছবি ব্যবহার করা পাঠ্য বইটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। সরকারি কর্তাদের বক্তব্য, “শিশুদের এই অপশিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা কোনওভাবে বরদাস্ত করা যায় না। জানা গিয়েছে, ‘চাইল্ডস স্টাডি’ নামে ওই বইটি সরকারি অনুমোদনহীন। তা সত্ত্বেও বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস স্কুল-সহ বেশকিছু জায়গায় প্রাক-প্রাথমিকে সেটি পড়ানো হচ্ছিল।
কয়েকদিন ধরেই একটি বইকে নিয়ে চলছে বিতর্ক। যেখানে ‘U’ বর্ণের সঙ্গে পরিচিত করতে ‘UGLY’ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। ‘কুৎসিত’ শব্দের মানে বোঝাতে এক কৃষ্ণাঙ্গের ছবি দেওয়া হয়েছে। সেই ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, অনুমোদন ছাড়াই ওই বই পড়ানোর অভিযোগে দুই শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। শুক্রবার রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করল। সেখানে বলা হয়েছে ‘চাইল্ডস স্টাডি’ বইটির অনুমোদন নেই। এই পাঠ্যপুস্তক রাজ্যের কোথাও পড়ানো যাবে না। জেলা স্কুল পরিদর্শকদের (প্রাথমিক) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই বইটি যে পড়ানো হচ্ছে না, তা ১৫ জুনের মধ্যে সমস্ত স্কুলকে জানাতে হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার ঘটনায় উত্তাল গোটা দুনিয়া। এরই মাঝে বিকাশ ভবনে খবর আসে, বর্ধমানের সরকার পোষিত স্কুল-সহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে এমন বর্ণ বিদ্বেষ মূলক বিষয় থাকা বই পড়ানো হচ্ছে। ‘আগলি’ (UGLY) শব্দের অর্থ বোঝাতে ব্যবহার করা হয়েছে এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির ছবি। শিশুদের শেখানো হচ্ছে কালো বা কৃষ্ণাঙ্গ মাত্রেই কদাকার এবং কুৎসিত। এই পাঠ্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন অভিভাবকরা। বইটির প্রকাশকের তীব্র নিন্দা করে বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, “কোনও বেসরকারি পাঠ্যপুস্তক স্কুলে পড়ানোর আগে প্রত্যেকটি পাতা খতিয়ে দেখা সম্ভব নয়।” পাশাপাশি যে প্রক্রিয়ায় দুই শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করা হল তা গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ব্যাহত করছে এমনটাও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, “শোকজ করে উত্তরে সন্তুষ্ট না হলে তাঁদের সাসপেন্ড করা যেতে পারত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.