ধীমান রায়, কাটোয়া: শহরের একটি লজে বসেছে বিয়ের আসর। কনের আত্মীয়-পরিজনের ব্যস্ততার শেষ নেই। এমনকী, বিয়ের দিন সকালে পাত্রী নিজেও অতিথিদের খাবার পরিবেশন করছেন! এমনই অভিনব দৃশ্য দেখা গেল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার একটি বিয়েবাড়িতে।
[ বদলাচ্ছে ‘অর্ধেক আকাশ’, কনকাঞ্জলিতে নিয়ম ভাঙলেন নববধূ]
কাটোয়া শহরের টাউনহল পাড়ার বাসিন্দা মেহেলি সাঁই। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে নাচ নিয়ে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন তিনি। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান মেহেলি। তাঁর কোনও ভাই নেই। পাত্রী নিজেই জানালেন, কয়েক মাস আগে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে কেতুগ্রামের বারান্দা গ্রামে একটি অনাথ আশ্রমে গিয়েছিলেন। আশ্রমে থাকে জনা পঞ্চাশেক কিশোর। সকলকেই ভাই পাতিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি মেয়ের বিয়ে ঠিক করেন মেহেলির বাবা-মা। ওই তরুণী সিদ্ধান্ত নেন, বিয়ের দিন নিজে হাতে ভাইদের খাবার পরিবেশন করবেন তিনি। তারপরই রাতে বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন। মাঝে একদিন দরজিকে সঙ্গে নিয়ে কেতুগ্রামের বারান্দা গ্রামে ওই অনাথ আশ্রমেও গিয়েছিলেন মেহেলি। রীতিমতো মাপ নিয়ে আবাসিকদের নতুন পাঞ্জাবী-পাজামা উপহার দিয়েছেন তিনি।
বুধবার সকালে কাটোয়ার একটি লজে একই রঙের পাঞ্জাবী পরে ‘দিদি’র বিয়েতে হাজির হয়েছিল পঞ্চাশ জন অনাথ কিশোর। তাদের অ্যাপায়ণে কোনও ত্রুটি রাখেননি মেহেলিও। বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগে নিজের হাতে পরিবেশন করে ‘ভাই’দের খাইয়েছেন তিনি। এদিকে আত্মীয়স্বজন তো বটেই, বিয়ের দিন সকালে মেয়ের এমন কাণ্ড দেখে হতবাক মেহেলি সাঁইয়ের বাবা-মা। কিছুই জানতেন না তাঁরা। মেহেলির বাবা সুব্রত সাঁই বলেন, ‘বিয়ের খরচ বাঁচিয়ে অনাথ শিশুদের খাওয়ানোর পরিকল্পনা ও আয়োজন মেয়েই করেছে। আর সন্তান আনন্দ পেলে বাবা-মা তো খুশিই হয়।’
ছবি: জয়ন্ত দাস
[ হাসপাতাল চত্বরে সরষে চাষ! কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.