ধীমান রায়, কাটোয়া: সরকারি প্রকল্পে কাটমানি নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তবে নিজের পকেট থেকে যে টাকা দিতে পারবেন না, তাও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এদিকে টাকা আদায় করতে বদ্ধপরিকর গ্রামবাসীরা। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যতদিন না কাটমানি ফেরত দিচ্ছেন, ততদিন এলাকার তৃণমূল কর্মীদের সামাজিকভাবে বয়কট করা হবে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান আউশগ্রাম থানার দেয়াশা গ্রামে।
আউশগ্রামের গুসকরা ২ অঞ্চলের দেয়াশা গ্রাম। গত কয়েক দিন ধরেই কাটমানি নিয়ে গ্রামে অসন্তোষ চলছিল বলে জানা গিয়েছে। গ্রামবাসীরা সিদ্ধান্ত নেন, এলাকায় সালিশি সভা বসানো হবে। গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সালিশি সভার কথা জানিয়েও দেওয়া হয়। এমনকী, ঢেড়া পিটিয়ে চলে প্রচারও। মঙ্গলবার সকালে সালিশি সভা বসে দেয়াশা গ্রামের ধর্মরাজতলায়। সভায় ডাকা হয় দেয়াশা অঞ্চল সভাপতি-সহ তৃণমূল কংগ্রেসের ৯ জন নেতা-কর্মীকে। গ্রামবাসীদের দাবি, সালিশি সভায় তৃণমূল নেতারা স্বীকার করে নেন, সরকারি প্রকল্পে কারও কাছে ৫ হাজার টাকা, তো কারও কাছে আবার ১০ টাকাও নিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সেই টাকা দলের কাজেই খরচ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিনয় মণ্ডল বলেন, ‘আমরা দলীয় কাজের জন্য অল্পবিস্তর টাকা নিয়েছিলাম। সেই টাকা দলের কাজেই খরচ হয়ে গিয়েছে। এখন টাকা কি করে ফেরত দেব?’ সালিশি সভায় একই জবাব দিয়েছেন শাসকদলের বাকি নেতারাও। এরপরই কাটমানি ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের সামাজিকভাবে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেন আউশগ্রামে দেয়াশা গ্রামের বাসিন্দারা।
এদিকে কাটমানি ফেরত দিতে না চাওয়ার অভিযোগে দলের নেতার বয়কটের মুখে পড়ে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতৃত্ব। আউশগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শেখ সালেক রহমান বলেন, ‘গ্রামে গ্রামে মিলিতভাবে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করতে চাইছে বিজেপি ও সিপিএম। চাঁদা দেওয়া যদি কাটমানি হয়, তাহলে সরাসরি প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানান গ্রামবাসীরা। প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.