টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: তীব্র দাবদাহে নাজেহাল। ছিঁটেফোঁটা বৃষ্টির দেখা মিললেও, তাতে গরম থেকে আরাম মেলে না। গলদঘর্ম দশা রাজ্যবাসীর, তাঁর উপর বৃষ্টি না হওয়ায় চাষেও ব্যাপক ক্ষতি। এবার তাই বরুণদেবকে তুষ্ট করে বৃষ্টি নামাতে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাঁটিতে আয়োজন করা হল যাগযজ্ঞের।
২০১৬ সালে তৎকালীন এক বিজেপি সাংসদ বীরেন্দ্র সিং দেশে খরা মোকাবিলা ও বৃষ্টির জন্য যজ্ঞ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বৃষ্টির দেবতাকে তুষ্ট করতে যজ্ঞের আয়োজনের পৌরাণিক কাহিনির উল্লেখও করেছিলেন তিনি। ওই বিজেপি সাংসদের প্রস্তাব সেই সময় ফলপ্রসূ হয়নি ঠিকই। তবে দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর দেখানো পথেই হাঁটলেন বাঁকুড়াবাসী।
বৃষ্টির আশায় শনিবার ঘটা করে যজ্ঞের আয়োজন করা হল বাঁকুড়ার কেশিয়াড়া গ্রামে। মেটিয়ালা, ভিজাডাংরা-সহ একাধিক গ্রামের মানুষ জড়ো হন ওই এলাকায়। প্রসঙ্গত, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটে বাঁকুড়ায় জয়ী হয়েছে বিজেপি। পাটিগণিতের হিসেবে এখনই বিধানসভা নির্বাচন হলে এই জেলার সবক’টি বিধানসভা আসনেই পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৃণমূল কংগ্রেসের। ফলপ্রকাশের পর থেকেই একে একে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন অনেক নেতা, কর্মী। অনেকেই দল থেকে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন ক্রমশ। সেইসঙ্গে পদ্ম শিবিরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখছেন কেউ কেউ৷ অর্থাৎ জেলায় প্রভাব বাড়ছে বিজেপির।
যদিও এবছরই প্রথম নয়, আগেও বৃষ্টির জন্য এখানে প্রার্থনার আয়োজন করেছিলেন বাঁকুড়াবাসী৷ স্থানীয় বাসিন্দা শুভজিৎ সিংহ বলছেন, “এই গ্রামে বিঘার পর বিঘা জমিতে জলের অভাবে চাষ হয় না। সেই কারণেই গত কয়েক বছর ধরে আমরা এই যজ্ঞের আয়োজন করছি। এবছরও করেছি।” আয়োজক দয়াময় গোস্বামীর কথায়, “অনাবৃষ্টির কারণে আমরা জ্বলেপুড়ে মরছি, তাই বৃষ্টির দেবতাকে তুষ্ট করতে এই উদ্যোগ। “
এদিন তীব্র গরমে আগুনের কুণ্ডলীর মাঝে বসে যজ্ঞ করেন এক সাধু। তিনি বলেন, যজ্ঞের ধোঁয়া আকাশে গিয়ে মেঘ হয় এবং তা বৃষ্টি হয়ে মাটিতে নেমে আসে। গত কয়েক দিন ধরে বাঁকুড়ার আকাশে মেঘ রয়েছে। কিন্তু বৃষ্টি হয়নি। এদিনও সকাল থেকে অসহ্য ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল হয়েছেন বাসিন্দারা। এবার বৃষ্টির দেবতা কি তাঁদের দিকে আশীর্বাদ বর্ষণ করেন কি না, সেই দিকেই তাকিয়ে জেলাবাসী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.