মুর্শিদাবাদের অশান্তি। ফাইল ছবি
শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: থমথমে এলাকা। চারদিকে ধ্বংসের চিহ্ন। পড়ে রয়েছে পুড়ে যাওয়া বাস, অ্যাম্বুল্যান্সের লোহার কাঠামো। রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ইট। চলছে ভারী বুটের টহলদারি। সতর্ক নজর অলিগলিতে। শুক্রবার ‘তাণ্ডবে’র পর এটাই মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের চিত্র। উত্তপ্ত হয়ে ওঠা সুজার মোড়েও রয়েছে নজরদারি। হিংসায় গ্রেপ্তারির সংখ্যা একশো ছাড়িয়েছে। তবে সামগ্রিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলেই জানিয়েছে পুলিশ।
ওয়াকফ সংশোধনী আইন (Waqf Bill Protest) প্রত্যাহারের দাবিতে শুক্রবার বিকেল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদ (Murshidabad)। জঙ্গিপুরের ঘটনার পর ১৬৩ ধারা অমান্য করে প্রতিবাদে নামে স্থানীয়রা। তারা ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করলে পুলিশের বাধায় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। সামশেরগঞ্জের ধুলিয়ান ডাকবাংলো ও রতনপুর এলাকায় পরিস্থিতি সব থেকে খারাপ হয়। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ট্রাফিক পুলিশের অফিস। জ্বালানো হয় সরকারি-বেসরকারি বাস। বাদ যায়নি অ্যাম্বুল্যান্সও। অভিযোগ, হামলা চালানো হয় স্থানীয় বিধায়ক মনিরুল ইসলাম, সাংসদ খলিরুল রহমানের বাড়িতেও। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি চলে। অভিযোগ বোমাবাজিরও। আক্রান্ত হন ফরাক্কার এসডিপিও। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় বিএসএফ। শনিবার সকালে ধুলিয়ান এলাকায় পুলিশের সঙ্গে রয়েছে বিএসএফের নজরদারি।
অন্যদিকে, শুক্রবার উত্তেজনা ছড়ায় সুতির সুজার মোড়েও। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। সড়কপথে দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় উত্তরবঙ্গের। শনিবার সকালে স্বাভাবিক হয়েছে যান চলাচল। ব্যাহত হয় ট্রেন পরিষেবাও। মুর্শিদাবাদের একাধিক স্টেশনে ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে। তবে রাতের দিক থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। স্টেশনগুলির নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত আরপিএফ মোতায়েন রয়েছে। এদিকে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয় ২ জন। তাদের মধ্যে একজন কিশোর। তার বুকে পুলিশের গুলি লেগেছে বলে অভিযোগ পরিবারের। এদিকে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। জনতাকে কোনও প্ররোচনায় পা না দিয়ে শান্তি বজায় রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে। নতুন করে যাতে উত্তেজনা না ছড়ায় সেই দিকে নজর রাখছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.