ধীমান রায়, কাটোয়া: পাইপ বাঁচাতে পানীয় জলের দেদার অপচয়। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব। একদিন-দু’দিন নয়, বছর পর বছর এমনটাই হয়ে চলেছে কাটোয়া, ভাতার-সহ পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকায়। এই ঘটনার জন্য প্রশাসনের উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ভূগর্ভে জলের স্তর বিপজ্জনকভাবে কমছে। অবিলম্বে জলের অপচয় বন্ধ না করলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিতে পারেন। সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ রাজ্যে জল সংরক্ষণ নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে প্রচারে নেমেছে সরকার। আগামী ১২ জুলাই ‘জল বাঁচান, জীবন বাঁচান’ দিবস উপযাপন করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এসবের মাঝেই জলের দেদার অপচয় হচ্ছে কাটোয়া, ভাতার-সব পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকায়। প্রশাসন জানে না এমনটা কিন্তু নয়। বরং প্রশাসনের মদতেই জলের অপচয় হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কাটোয়ার ১ নম্বর ব্লকের খাজুরডিহি পঞ্চায়েতে অন্তর্গত ৯টি গ্রাম। ওই পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ১২ হাজার মানুষের বাস। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বছর চারেক আগে খাজুরডিহিতে জল সরবরাহের জন্য চালু করা হয় একটি জলপ্রকল্প। দুটি পাম্প বসানো হয়, চারটি অঞ্চলে রাস্তায় মোড়ে মোড়ে ট্যাপ কলও লাগানো হয়। তবে বাড়ি বাড়ি জলে সংযোগ দেওয়ার কাজ এখনও হয়নি। গ্রামবাসীদের দাবি, খাজুরডিহি পঞ্চায়েত এলাকায় কমপক্ষে ৮০টি ট্যাপকল রয়েছে। কিন্তু সিংহভাগ কলের মুখেই ট্যাপ নেই। দিনে চারবার কল থেকে জল পাওয়া যায়। তখন যাঁর যতটা প্রয়োজন, ততটা জল সংগ্রহ করে নেন গ্রামবাসীরা। কিন্তু বাকি জল রাস্তা পড়ে নষ্ট হয়। কাটোয়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কণিকা বায়েন সরকারের সাফাই, ‘জলপ্রকল্পের জলাধার এখনও তৈরি হয়নি। সরাসরি সাবমার্সিবল পাম্প চালিয়ে জল সরবরাহ করা হয়। যদি এই সব কলের মুখে ট্যাপগুলি লাগানো অবস্থায় সাবমার্সিবল পাম্প চালানো হয়, তাহলে জলের চাপে পাইপ ফেটে যেতে পারে। তাই আমরা ট্যাপগুলি লাগাতে পারছি না।” শুধু কাটোয়াতেই নয়, স্রেফ কলের মুখে ট্যাপ না থাকার কারণে দেদার জলের অপচয় হচ্ছে আরও অনেক জায়গাতেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.