সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই চেনা অস্ত্রে শান দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। জঙ্গলমহলের মাটিতে দাঁড়িয়ে কার্যত স্পষ্ট করে দিলেন বিভাজনের রাজনীতিই বিজেপির ‘ট্রাম্প কার্ড’। সুকৌশলে পুরুলিয়াবাসীর সঙ্গে রামের আত্মিক যোগ থেকে জাতীয়তাবাদী আবেগকে ছুঁয়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদি।
ভোট ঘোষণার পর দ্বিতীয় দফার প্রচারে পুরুলিয়ায় (Purulia) সভা করলেন বিজেপির তারকা প্রচারক নরেন্দ্র মোদি। ভাঙড়া মোড়ের সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে পুরুলিয়ার সঙ্গে রামের আত্মিক যোগের কথা তুলে ধরলেন তিনি। সুকৌশলে পুরুলিয়ার জলকষ্টের সঙ্গে জুড়ে দিলেন রামায়ণকে। বললেন, “রামের সঙ্গে পুরুলিয়াবাসীর আত্মিক যোগ আছে। বনবাসের সময় সীতা যখন তৃষ্ণার্ত ছিলেন, সেই সময় বাণ মেরে মাটি থেকে জল বের করেছিলেন শ্রীরাম। এর থেকেই স্পষ্ট পুরুলিয়ায় জলের পরিস্থিতি কতটা ভাল ছিল।” এর পর সেই গল্পের সূত্র ধরেই পুরুলিয়ার বর্তমান জলকষ্ট নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে কটাক্ষ করলেন মোদি। বললেন, “গত ৮ বছর ধরে পুরুলিয়ায় জলপ্রকল্প বাস্তবায়িত করতে পারেননি মমতা।” জঙ্গলমহল, পুরুলিয়ার মানুষের জলকষ্টের কথাও ভাষণের ছত্রে ছত্রে মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন সভায় মোদির মুখে উঠে আসে বাটলা হাউজ প্রসঙ্গও। মমতাকে কটাক্ষ করে মোদির দাবি, “বাটলা হাউজ এনকাউন্টারে সন্ত্রাসবাদীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন দিদি। সেদিন কেন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন? মানুষ সব বোঝে। ভারতীয় সেনার দিকেও দিদি আঙুল তুলেছিলেন। বাংলার মানুষ কিছু ভোলেনি।” এরপরই তোষণের রাজনীতি নিয়ে ফের একবার তৃণমূলকে বিঁধলেন মোদি। বললেন, “বাংলায় অনুপ্রবেশকে মদত দেওয়ার পিছনেও একটাই লক্ষ্য, ভোটব্যাংকের রাজনীতি।” প্রধানমন্ত্রীর কথায়, তোষণের রাজনীতি করতে গিয়ে ওবিসি সার্টিফিকেটে নাম তোলার ক্ষেত্রেও দুর্নীতি করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
এদিনও ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি নিয়েও মমতাকে খোঁচা দিতে ভোলেননি প্রধানমন্ত্রী। বললেন, রামনাম সহ্য করতে পারেন না দিদি। গাড়ি থেকে নেমে আপনি কতজনকে বকাবকি করেছিলেন? সেকথাও বাংলার মানুষ মনে রেখেছে। প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ির সামনে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়েছিলেন কয়েকজন। সেই সময় বেশ রেগে গিয়েছিলেন তিনি। এমনকী কয়েকজনকে বকাবকিও করেন। এদিন সে কথাই আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন মোদি।
উল্লেখ্য, জঙ্গলমহল অর্থাৎ পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামে লোকসভা নির্বাচনে তাৎপর্যপূর্ণ ফল করেছে বিজেপি। সেই সময়ও এই বিভাজনের রাজনীতিই সোনার ফসল ফলিয়েছিল জঙ্গলমহলের মাটিতে। তাই বিধানসভা নির্বাচনের আগে ফের একাবার সেই বিভাজন, জাতীয়তাবাদের চেনা অস্ত্রেই শান দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.