চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়: তিলতিল করে জমানো টাকায় কেউ মেয়ের বিয়ের জন্য গয়না গড়িয়েছিলেন। দুষ্কৃতীরা লুটপাট করে সেই ঘরে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। চারদিন আগেই টোটো কিনেছিলেন এক যুবক। দেড় লক্ষ টাকা লোন নিয়ে তা কেনা হয়েছিল সংসার চালানোর জন্য। বুধবার রাতে একদল দুষ্কৃতী হামলা চালিয়ে সেই টোটো ভেঙেচুরে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। রাস্তার ধারে ছোট্ট ঝুপড়ি তৈরি করে যারা দোকান করেছিলেন সেই সব দোকানও নিস্তার পায়নি দুষ্কৃতীদের হামলা থেকে। সামান্য মিষ্টির দোকান থেকে সেলুন সব জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যায় গোটা রেলপাড় জুড়ে। সামান্য হলেও যাতে বিপদে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা ঘুরে দাঁড়াতে পারেন তার জন্য এবার উদ্যোগ নিল আসানসোল পুরনিগম।
[ পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সিদ্ধান্ত বদল ]
আসানসোল পুরনিগমের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি জানান, হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেবে পুরনিগম। রানিগঞ্জ-আসানসোলে হিংসার ঘটনায় যাদের ঘর-বাড়ি পুড়েছে, ভাঙচুর হয়েছে তাঁদেরকে প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। যাতে নষ্ট হয়ে যাওয়া দরজা-জানালা বা চালাঘর মেরামতি করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন ক্ষতিগ্রস্তরা। তিনি বলেন এই ঘটনায় যে কয়েক জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে তাঁদের পরিবারকে এককালীন ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এছাড়াও মৃতের পরিবারের একজনকে পুরনিগমের চাকরি দেওয়া হবে। আগামী তিনদিনের মধ্যে আর্থিক ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হবে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে। পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব একটি টিম গঠন করা হয়েছে। যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়ে সমীক্ষা করা হবে। সেই সমীক্ষা শুরু হয়ে যাবে সোমবার থেকেই। আর্থিক ক্ষতিপূরণ ছাড়াও রিলিফ কিট তাঁরা পৌঁছে দেবেন সেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির কাছে। মেয়র বলেন ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে কিছু দীর্ঘমেয়াদি বিষয়ও থাকবে। যতক্ষণ না স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারছেন ক্ষতিগ্রস্ত নাগরিকরা পুরনিগমের পক্ষ থেকে ততক্ষণ সহযোগিতা ও সাহায্য করা হবে।
[ স্কুলের ফর্মে ধর্ম উল্লেখ না করে নজির মহম্মদবাজারের ছাত্রীর ]
রবিবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ঘুরে গিয়েছেন বিজেপির চার কেন্দ্রীয় সদস্য। কিন্তু রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, বিডি রাম, ওমপ্রকাশ মাথুর ও শাওনাজ হোসেন পুরো রেলপাড় এলাকায় যাননি বলে অভিযোগ। রামকৃষ্ণডাঙাল ও আমবাগানে গেলেও শ্রীনগর, ওকেরোড, মহুয়াডাঙাল এলাকায় তাঁরা যাননি। অভিযোগ, শুধুমাত্র একটি গোষ্ঠী অধ্যুষিত এলাকাতেই তাঁরা গিয়েছিলেন। শনিবার রাজ্যপালও একটি এলাকা ঘুরে অন্য কোথাও যাননি বলে অভিযোগ। এমনকি রানিগঞ্জেও তাঁরা যাননি। তবে পুরনিগমের এই ঘোষণার পর স্বস্তি পেয়েছেন উভয় গোষ্ঠীর ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন। ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে এখানে রাজনৈতিক ভেদাভেদ থাকবে না বলেই তাঁরা মনে করছেন। কারণ এর আগে আসানসোলে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনও ভেদাভেদ দেখা যায়নি। এক্ষেত্রেও দেখা যাবে না বলেই অভিমত।
এদিকে এই ঘটনায় রাজ্য সরকারকে নোটিস দিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
National Human Rights Commission issues notices to the Government of West Bengal over unabated violence in Asansol- Raniganj area, also asks its DG (Investigation) to depute a team for spot inquiry.
— ANI (@ANI) April 2, 2018
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.