সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পঞ্চায়েত ভোটের গণনা চলছে। দিনভর প্রার্থীদের ব্যস্ততা শেষ নেই। ঘনঘন ফোনে আসছে ফল ঘোষণার খবর। পুরুলিয়ার বরাবাজার পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী প্রসেজিৎ মল্লের অবশ্য সেসব নিয়ে কোনও মাথাব্যাথা নেই। বৃহস্পতিবার সকাল সকালই তিনি চলে গিয়েছিলেন গঙ্গার ধারে। প্রয়াত বাবার শ্রাদ্ধ ও ক্ষৌরকর্ম সারতে। ঘটনাচক্রে বাবার শ্রাদ্ধের দিনই পঞ্চায়েত ভোটে জিতলেন তিনি।
[গড় হারিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি অধীরের, মালদহেও হতশ্রী কংগ্রেস]
বাবা প্রয়াত আদিত্য সিং মল্লও রাজনীতি করতেন। একসময়ে শাসকদলের ব্লক সভাপতিও ছিলেন। বাম জমানায় বিরোধী রাজনীতি করার অপরাধে দীর্ঘদিন একঘরে থাকতে হয়েছিল তাঁর পরিবার। কিন্তু, কোনও দিন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আদর্শ থেকে সরে আসেননি আদিত্যবাবু। শেষ বয়সে ভীষণভাবে চেয়েছিলেন, ছেলে প্রসেনজিৎও রাজনীতিতে আসুক। বাবার হাত ধরেই রাজনীতিতে প্রবেশ ছেলের। কিন্তু, যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাঁর আজীবনের লড়াই, পঞ্চায়েত ভোটের মুখে আদিত্য মল্ল নিজেই যে সেই সন্তাসেরই বলি হয়ে গেলেন! বুকে পাথর রেখে অশৌচ গায়ে হোবিষ্যি খেয়েই চলে ছেলে তৃণমূল প্রার্থী প্রসেজিতের প্রচার। ছেলের হয়ে প্রচারে শামিল হয়েছিলেন প্রয়াত নেতার স্ত্রীও। অবশেষে এল সেই কাঙ্খিত জয়! সদ্য নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য প্রসেনজিৎ মল্লের আফশোস একটাই, তাঁর ভোটে জেতা দেখে যেতে পারলেন না বাবা।
[তৃণমূল হটিয়ে বাংলা বাঁচান, পরাজয় নিশ্চিত জেনেও আহ্বান সূর্যকান্তর]
বৃহস্পতিবার যখন পঞ্চায়েত ভোটের গণনা চলছে, তখন গঙ্গার ধারের বাবা শ্রাদ্ধ ও ক্ষৌরকর্মে ব্যস্ত প্রসেনজিৎ। নিষ্ঠাভরে সমস্ত সামাজিক রীতি মেনে পারলৌকিক কাজ সারলেন তিনি। এদিকে, ততক্ষণে ফোনে ফল ঘোষণার খরব আসতে শুরু করেছে। কখনও ৭৫, কখনও ১৩০ আবার কখনও ২৫০। বেলা যত গড়িয়েছে, বরাবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতে ৯ নম্বর আসনে তৃণমূল প্রার্থীর মার্জিন বেড়েছে। শেষয়পর্যন্ত, ৩৪৭ ভোটে জিতলেন প্রসেনজিৎ। গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোটে মার্জিনটা একেবারেই মন্দ নয়। বরং বেশ ভালই বলা চলে। এবারই প্রথম ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন প্রসেনজিৎ মল্ল। গ্রামবাসীরা বলছেন, তাঁর এই জয় সন্ত্রাসের বিরু্দ্ধে বাবার লড়াইয়ের স্বীকৃতি।
ছবি: অমিত সিংদেও
[ভাঙড়ে পাঁচটি আসনে জয়ী জমিরক্ষা কমিটি, জেলে থেকেও জয় পেলেন আরাবুল]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.