বাবুল হক, মালদহ: পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পেশ করাকে কেন্দ্র করে যখন তুমুল বিতর্ক রাজ্য জুড়ে, তখন ভোটের ময়দানে জমজমাট মামা-ভাগনের লড়াই মালদহের মালতিপুরে।
ভাগনে গোমিরুদ্দিনের দাবি, “আমি কিন্তু মামার অনুমতি নিয়েই দাঁড়িয়েছি। মামাকে সেদিন বললাম, আমি কি ভোটে দাঁড়াব মামা? উনি বললেন, দাঁড়িয়ে যাও। তাই দাঁড়িয়ে পড়েছি।” ভোটযুদ্ধের ময়দানে এবার মালতিপুরে মুখোমুখি মামা-ভাগনে। মামা সারিফুদ্দিন শেখ কংগ্রেসের প্রার্থী। সেই একই আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন শেখ গোমিরুদ্দিন। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি’ও জমি ছাড়ছেন না। একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার লড়াই কার্যত শুরুতেই জমে উঠেছে। উত্তর মালদহের চাঁচোল মহকুমার মালতিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। এখানেই গ্রাম সংসদের আটঘরার ৪ নম্বর আসনে মুখোমুখি লড়ছেন মামা ও ভাগ্নে।
[অব্যাহত পঞ্চায়েত নির্বাচন মামলার জট, ডিভিশন বেঞ্চে যাচ্ছে বাম-কংগ্রেস]
দু’জনেই বলছেন, রাজনৈতিক লড়াই হবে। কখনই মামা-ভাগ্নের সম্পর্কে চিড় ধরবে না। পরিবারেও কোনও প্রভাব পড়তে দেবেন না তাঁরা। আটঘরা গ্রামের ভোটাররাও তৈরি। তাঁরা মামা অথবা ভাগ্নের মধ্যেই একজনকে বেছে নিতে পারেন বলে স্থানীয়রা মনে করছেন। সারিফুদ্দিন শেখ পেশায় অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক। বয়স এখন ৬২। দীর্ঘদিন ধরেই কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত তিনি। আটঘরা গ্রামের প্রবীণ কংগ্রেস নেতা হিসাবেও এলাকায় পরিচিত। পরিবারে তাঁর স্ত্রী ও তিন ছেলেমেয়ে রয়েছেন। তবে এই শেষ বয়সে প্রথম নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন সারিফুদ্দিন সাহেব।
তাঁর কথায়, “ভাগনে এখন অনেক বড় হয়েছে। ওর রাজনীতি করার স্বাধীনতা রয়েছে। ওকে কোলে-পিঠে করে মানুষ করেছি। আমাকে বলেছিল, ভোটে দাঁড়াবে। আমি বললাম, দাঁড়িয়ে যাও। কোনও সমস্যা হবে না। ”
[পঞ্চায়েত হিংসা নিয়ে দিল্লিতে দরবার রাজ্য বিজেপির]
ভাগ্নের বিরুদ্ধে জোর প্রচার চালাচ্ছেন কংগ্রেস প্রার্থী মামা সারিফুদ্দিন শেখ। তৃণমূল প্রার্থী শেখ গোমিরুদ্দিন পেশায় ব্যবসায়ী। বয়স ৪০। পরিবারে স্ত্রী ও সন্তানরা রয়েছেন। ভোট প্রচারে মামাকে বিন্দুমাত্র কটাক্ষ করছেন না গোমিরুদ্দিন। তাঁর মুখে শুধু নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের কথা। এই তৃণমূল প্রার্থী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের জোয়ার দেখেছেন বাংলার মানুষ। বাম-কংগ্রেস জমানায় কিছুই কাজ হয়নি। তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পর গ্রামবাংলার চেহারাটাই বদলে গিয়েছে। আমি মামাকে হারাতে চাই না, মমতা দিদির উন্নয়নই মামার কংগ্রেসকে বাংলা থেকে মুছে দেবে। আটঘরার চার নম্বর আসনে এবার তৃণমূলই জিতবে। হারবে কংগ্রেস।”
মালতিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ২০ টি আসন। ২০১৩ সালে কংগ্রেস ১১টি আসন পেয়েছিল। সিপিএম ৭টি আর তৃণমূল ২টি আসন পেয়েছিল। কংগ্রেস পরিচালিত মালতিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে সব আসনেই এবার প্রার্থী দিয়ে লড়াইয়ে নেমেছে তৃণমূল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.