সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আজও প্রবল জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর। যার জন্য কড়া সতর্কতা জারি রয়েছে সমুদ্র সৈকতগুলোতে। রবিবার অবধি মৎসজীবীরা যাতে সমুদ্রে না যান, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। মূলত, দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে আবহাওয়ার ভ্রুকূটি থেকে আপাতত আড়ালে দক্ষিণবঙ্গ। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী দু’দিন বিক্ষিপ্তভাবে হালকা এবং মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে রাজ্যের দক্ষিণের অঞ্চলগুলিতে। নিম্ন অক্ষরেখা এবং ঘূর্ণাবর্তের জেরেই মূলত পশ্চিমাঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: হুকিংয়ের জেরে বিদ্যুৎ-ঘাটতি, সমস্যা সমাধানে বৈঠকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক]
সমুদ্রে অত্যধিক জলোচ্ছ্বাসের জন্য উপকূলবর্তী ৫ টি অঞ্চলে জল ঢুকেছে। সূত্রের খবর, আষাঢ়ের অমাবস্যার কোটালের ব্যাপক জলোচ্ছ্বাসের জেরে দুর্বল সমুদ্রবাঁধ উপচে শুক্রবার রামনগরের সমুদ্রতীরবর্তী শংকরপুর, জামড়া, চাঁদপুর প্রভৃতি গ্রামে সমুদ্রের নোনা জল ঢুকে পড়েছে। এদিন সকাল থেকেই বাঁধ উপচে এবং মেরিন ড্রাইভের রাস্তা টপকে জল ঢুকেছে ওই গ্রামগুলিতে। যার জেরে নষ্ট হয়েছে ৭০ হেক্টর চাষের জমি। সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলিতে চাষের জমির পাশপাশি ক্ষতি হয়েছে পুকুরগুলিও। জল ঢুকে পড়ায় ওই তিনটি গ্রামের সমুদ্র তীরবর্তী স্থানে মাটির বাড়ি করে থাকা বেশ কয়েকটি পরিবারের এখন রীতিমতো বিপদ শিয়রে এসে দাঁড়িয়েছে। তাঁদের যথাযথ নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে বলে খবর।
[আরও পড়ুন:চোখের সামনে মৃত্যু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ছেলের, বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ হারাল মা ও বোন]
স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, যেহেতু আবহাওয়া খারাপ, তাই রাতে জোয়ার আসলে ফের ব্যাপক পরিমাণে জল ঢুকতে পারে গ্রামগুলিতে। এই আশঙ্কার কথা ভেবেই এলাকার বাসিন্দারা আপাতত চরম আতঙ্কে রয়েছেন। আর তাই সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আরজিও জানিয়েছেন। এদিন খবর পেয়ে রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শম্পা মহাপাত্রের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল ওই সমস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান। সঙ্গে ছিলেন সংশ্লিষ্ট তালগাছাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলেন, “এদিন কিছু মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির নেতৃত্বে বিপর্যয় মোকাবিলা দল প্রস্তুত রয়েছে। দুর্গতদের স্থানীয় সাইক্লোন সেন্টারে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে। কোনও বিপর্যয় হলেই বিপর্যয় মোকাবিলা দল ঝাঁপিয়ে পড়বেন।” এর পাশাপাশি তিনি জানান, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে শংকরপুর থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত সমুদ্রবাঁধ কংক্রিট দিয়ে বাঁধানোর কাজ হবে। এর জন্য যৌথভাবে ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে সেচ দপ্তর এবং পরিবেশ দপ্তর। বাঁধ কংক্রিট হয়ে গেলে আর কোনও সমস্যাই থাকবে না। অন্যদিকে, রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি বলেন, “স্থানীয় ব্লক প্রশাসন ও মহকুমা প্রশাসন পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রেখেছে। কোনও সমস্যা হলেই আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াব। পাশাপাশি সেচ দপ্তরকে সমস্ত বিষয় সম্পর্কে অবগত করা হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.