সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একুশের নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘মাথাব্যাথা’র নতুন কারণ হিসেবে উঠে এসেছেন ফুরফুরা শরিফের আব্বাস সিদ্দিকি (Abbas Siddique)। আব্বাস যে রাজনীতিতে নামতে চলেছেন, সে খবর অনেকদিন ধরেই ছিল। সম্প্রতি আসাদউদ্দিন ওয়েইসির সঙ্গে তার সাক্ষাতের পর সামান্য ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল তিনি পৃথক দল গড়বেন, নাকি ওয়েইসির মিমে যোগ দেবেন, সেটা নিয়ে। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে সেই সংশয় দূর করে দিয়েছেন ফুরফুরা শরিফের (Furfura Shariff) পিরজাদা। স্পষ্ট করে দিয়েছেন, তিনি নতুন দলই তৈরি করতে চলেছেন। এবং কমবেশি দশটি দলকে একত্রিত করে ফ্রন্ট তৈরি করবেন। মূলত দলিত, মুসলিম এবং পিছিয়ে পড়াদের নিজের ফ্রন্টে স্বাগত জানাচ্ছেন পিরজাদা। আব্বাস ঘোষণা করে দিয়েছেন, রাজ্যের সবকটি আসনেই প্রার্থী দেবে তার ফ্রন্ট।
মূলত বিজেপির সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরোধিতা করেই রাজ্যের ভোট ময়দানে অবতীর্ণ হতে চলেছেন মুসলিম ‘ধর্মগুরু’। কিন্তু আব্বাসের এই রাজনীতিতে আগমন বিজেপির (BJP) থেকেও চিন্তা বাড়াবে তৃণমূলের। আসলে একুশের ভোটে বিজেপি যে পুরোপুরি মেরুকরণের অঙ্কে খেলতে চলেছে সেটা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের প্রাথমিক লক্ষ্য সংখ্যালঘু ভোট এককাট্টা করা। কিন্তু তাতে বড় বাধা হতে পারেন আব্বাস। কারণ দুই ২৪ পরগনা, মালদহ, মুর্শিদাবাদের মতো জেলাগুলিতে তার অনুগামীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। তাছাড়া, AIMIM সুপ্রিমো আসাদউদ্দিন ওয়েইসিও (Asaduddin Owaisi) রাজ্যে এসে ঘোষণা করে গিয়েছেন, এ রাজ্যে আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে সমন্বয় রেখেই তিনি চলবেন। সেক্ষেত্রে আব্বাস এবং ওয়েইসির মিলিত শক্তি রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটারদের তাদের দিকে আকৃষ্ট করতে পারে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের। আর সেটা যদি হয়, তাহলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত যে তৃণমূল কংগ্রেস হবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
কিন্তু সেই ক্ষতি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে পালটা পরিকল্পনা সেরে ফেলেছে রাজ্যের শাসকদলও। আব্বাস যদি নিজেকে সংখ্যালঘু নেতা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন সেক্ষেত্রে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, হাজি নুরুল ইসলামদের মতো সংখ্যালঘু নেতাদের আসরে নামাবে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই আব্বাসের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে শাসকদল। আর আব্বাস যদি নিজেকে ধর্মনিরপেক্ষ নেতা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন সেক্ষেত্রে এমনিও খুব একটা লাভবান হবেন না বলে মনে করছে তৃণমূল (TMC)। তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের এক নেতা বলছিলেন, “দল গড়বে না ফ্রন্ট আগে ঘোষণা করুক। জবাব আমাদের প্রস্তুত আছে। আমরা মাঠে নেবে জবাব দেব। ওঁরা কৌশলে বাংলার সংখ্যালঘুদের মধ্যে ভাঙন ধরাতে চাইছে, তাতে লাভবান হবে না।” সুত্রের খবর, সংখ্যালঘু ভোটারদের একাত্ম করার জন্য মমতার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকেই সামনে রেখে এগোতে চাইছে তৃণমূল। আর তাছাড়া, বিজেপিকে যে তৃণমূল ছাড়া কেউ আটকাতে পারবে না, সেটাও বোঝানো হবে ভোটারদের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.