সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাজার ছেয়েছে ইলিশে। রুপোলি ফসল চকচক করছে মাছবাজারের ঝুড়িতে। কিন্তু তার বেশিরভাগই যে খোকা। দামও বেশ ভালই। অথচ তাতে না আছে স্বাদ, রান্নার সময় না পাওয়া যায় গন্ধ। তা হলে ইলিশের চরিত্র কি বদলে গেল!
মৎস্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, না। আসলে মাছ বড় হওয়ার সময় দেওয়া হচ্ছে না। তার আগে তা ধরা পড়ছে মৎস্যজীবীদের জালে। তাই ইলিশকে একটু ধেড়ে হওয়ার সময় দিতে এবার তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ করার ভাবনা রাজ্যের। বর্তমানে এপ্রিলের ১৬ তারিখ থেকে জুন মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত এই দু’মাস সমুদ্রে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। কিন্তু বছর দুয়েকের মধ্যে এই সময়কাল দু’মাসের বদলে তিন মাস করতে চাইছে রাজ্য। অর্থাৎ ১৬ এপ্রিল থেকে ১৫ জুলাই। এই তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ থাকলে সেক্ষেত্রে ছোট ইলিশ জালে উঠবে না। সমুদ্রেই আকারে বাড়বে তারা। বাজারে দেখা মিলবে বড় ইলিশের। ফিরে আসবে স্বাদ-গন্ধও।
মৎস্যদপ্তর সূত্রে খবর, খোকা ইলিশ ধরা বন্ধে চালানো হবে ব্যাপক প্রচারও। ছোট ইলিশ ধরতে গিয়ে ধরা পড়লে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হতে পারে। ডায়মন্ডহারবার, দিঘা, কাকদ্বীপ, নামখানা, কোলাঘাট থেকে ইলিশ ধরার জন্য ট্রলার নিয়ে মৎস্যজীবীরা ১৫ জুনের পর থেকেই সমুদ্রে যাওয়া শুরু করেন। যেখানে যেমন ইলিশ ওঠে, তা নিয়ে ফিরে আসেন। অনেক ক্ষেত্রেই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে মাছ ধরতে যাওয়া বিরতি দিতে হয় তাঁদেরও। জোগানের সঙ্গে চাহিদা অনুযায়ী দাম ওঠা-নামা করে। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে ইলিশ বাজারে থাকলেও আড়াইশো থেকে চারশো-সাড়ে চারশো গ্রামের মাছই বেশি। একটু বড় হলেই তার দাম হাজারের আশপাশে হয়ে যাচ্ছে। বাজার ভেদে কোথাও কোথাও তা আরও বাড়ছে।
মৎস্যদপ্তর সূত্রে খবর, ঝুড়ি ঝুড়ি ইলিশ ওঠা এখনও শুরু হয়নি। তা আরও কিছুদিন পর হবে। গত বছর যেখানে ৫৫৭১ মেট্রিক টন ইলিশ উঠেছিল, চলতি বছরে এখনও ১৪৭২ মেট্রিক টন ইলিশ উঠেছে। ফলে মূল ইলিশ এখনও ওঠা বাকি।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ সরকার ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞার যে সময়সীমা তা দু’মাসের বদলে বাড়িয়ে ৭০ দিন করেছে। এই সময়ের মধ্যে সেখানে খোকা ইলিশ ধরতে গিয়ে ধরা পড়লে শাস্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। কেন্দ্র সরকারের তরফে এখানেও যে দু’মাস মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়, সেটা ইলিশের বংশবৃদ্ধির সময়। বংশবৃদ্ধির পর আরও কিছুদিন সমুদ্রে থাকলে গায়ে-গতরে ইলিশ বেড়ে উঠবে, সে কথা মাথায় রেখেই মাছ ধরা বন্ধের সময়সীমা দু’মাসের বদলে তিন মাস করার কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য দপ্তরের এক কর্তা। তবে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.