রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: উদয়পুর সমুদ্র সৈকত এলাকা কোন রাজ্যের অধীনে? এই প্রশ্নকে ঘিরেই মঙ্গলবার উত্তেজনা ছড়াল ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের মধ্যে৷ এলাকায় ঢুকে রাস্তার পাশে থাকা রাজ্যের সরকারি ফলক এবং বিশ্ব বাংলা বোর্ড ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল ওড়িশা প্রশাসনের বিরুদ্ধে৷ ধাক্কাধাক্কিতে জড়ালেন দুই রাজ্যের পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীরা৷
[বালুরঘাটে বিজেপি প্রার্থীর অপহরণ ঘিরে চাঞ্চল্য, কাঠগড়ায় তৃণমূল]
দিঘা সীমান্ত লাগোয়া উদয়পুর সমুদ্র সৈকত এলাকাকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই চাপা উত্তেজনা চলছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও ওড়িশা সরকারের মধ্যে৷ একাধিকবার এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে৷ বৈঠকে বসেছেন জেলাশাসকরা। সূত্রের খবর, কথাবার্তা হয়েছে দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যেও৷ কিন্তু তেমন কোনও সুরাহা মেলেনি৷ মঙ্গলবার সেই উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়৷ অভিযোগ, এদিন সকালে দুশো থেকে তিনশো জনের কমব্যাট ফোর্স ও পুলিশ বাহিনী নিয়ে এসে উদয়পুর-সহ বিস্তীর্ণ চালায় তাণ্ডব চালায় ওড়িশা প্রশাসন৷ ভাঙচুর করে এলাকার বিভিন্ন স্থান৷ ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয় সরকারি ফলক৷ বাদ পড়েনি রাজ্য সরকারের বিশ্ব বাংলা লোগো সম্বলিত সাইন বোর্ড৷
[কচুবেড়িয়ায় বধূর অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার, ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ]
জানা গিয়েছে, এই হঠাৎ হামলার খবর পৌঁছাতেই তৎপর হয় দিঘা পুলিশ৷ এলাকায় পৌঁছে ওড়িশা পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্সকে বাধা দিতে যান তাঁরা৷ কিন্তু এরপরই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নেয়৷ দিঘা পুলিশের উপরে কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে ওড়িশা থেকে আগত পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্সের বিরুদ্ধে৷ উভয়পক্ষের মধ্যে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি৷ কিন্তু সংখ্যায় কম থাকায় পরে পিছু হটতে বাধ্য হন দিঘার পুলিশ কর্মীরা৷ রামনগর এক নম্বর ব্লকের বিডিও জানান, ওড়িশা প্রশাসনের কাছে আলোচনার জন্য এক সপ্তাহ সময় চাওয়া হলেও তাঁরা তা দেননি। বরং কোনও কথা না শুনেই এলোপাথাড়ি ভাঙচুর চালান হয়। ঘটনাটি প্রশাসনের উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানান হয়েছে বলেও তিনি জানান। দুই রাজ্যের প্রশাসনিক স্তরে এমন সমস্যার জেরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, উদয়পুরের মোটা অঙ্কের পর্যটন ব্যবসায় ভাগ বসানোর জন্যই ওড়িশা প্রশাসনের এই কৌশল৷
উল্লেখ্য, ম্যাসাঞ্জোর বাঁধের অধিকার নিয়েও দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছে পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড সরকারের মধ্যে৷ এই বিষয়ে আদালতে যাওয়ারও হুমকি দেন ঝাড়খণ্ডের সাংসদ নিশিকান্ত দুবে৷ এরাজ্যের বিরুদ্ধে ১৯৭৮-এর জলবণ্টন চুক্তি লঙ্ঘন করারও অভিযোগ আনেন তিনি৷ বলেন, চুক্তি অনুযায়ী যে পরিমাণ জলবিদ্যুৎ ও জল পাওয়া উচিত ঝাড়খণ্ডের তা থেকে তাঁদের বঞ্চিত করছে পশ্চিমবঙ্গ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.