ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য ও টিটুন মল্লিক: ক্রমশ আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গু। হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এই মুহূর্তে গোটা রাজ্যজুড়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত অন্তত ৯০০ জন। সংক্রমিতের তালিকায় রয়েছে খুদেরাও। রাজ্যের বর্তমান ডেঙ্গু গ্রাফ চিন্তা ধরাচ্ছে সকলকে। মশাবাহিত রোগ মোকাবিলায় তৎপর রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর।
বর্ষাকালে প্রতিবারই রাজ্যে মশাবাহিত রোগের উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। এবারও ছবিটা প্রায় একইরকম। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত অন্তত ৯০০। তাঁরা প্রত্যেকেই বিভিন্ন হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছে শিশুরাও। বিসি রায় শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্তত ২৬ জন। তাদের শারীরিক অবস্থা বেশ সংকটজনক। বাঁকুড়া পুরসভাতেও ক্রমশ বাড়ছে ডেঙ্গুর দাপট। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার রিপোর্ট অনুযায়ী, শহরের ২৪টি ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ২১৮। যার মধ্যে ১৭৬জন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩ জন এবং ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ১৬ জন। এছাড়া ১, ৬, ১০, ১১, ১২, ১৩, ২২, ২৩, ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডেও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন অনেকেই। বৃহস্পতিবার সকালে ধীবর পাড়ায় ১১ জনের শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু মিলেছে।
হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, দার্জিলিং-সহ উত্তরবঙ্গের ছ’টি জেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। ম্যালেরিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ রোধে তৎপর রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। প্রত্যেকটি সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে ২৫টি করে বেড রাখার কথা বলা হয়েছিল। রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল। কাউন্সিলরদের ডেঙ্গি মোকাবিলায় পদক্ষেপের নির্দেশও দিয়েছিল নবান্ন। জেলাশাসকদের এলাকা পরিষ্কার রাখার কথাও বলা হয়। সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও দেওয়া হয়েছিল জোর। ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় হাসপাতালগুলিতে আরও বেড বাড়ানোর ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।
কোভিড ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সময় স্বাস্থ্যভবনে ২৪ ঘণ্টার কল সেন্টার খোলা হয়েছিল। ঠিক সেই সময়ের মতো এবার ডেঙ্গু রোগীদের শারীরিক অবস্থা জানতে প্রতিটি জেলায় কলসেন্টার চালু করতে প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যসচিব। পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় সরকারি ব্লাড ব্যাংকে অন্তত পাঁচ ইউনিট প্লেটলেট আলাদা করে মজুত রাখতে বলা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় ডেঙ্গু মনিটরিং টিম তৈরি হচ্ছে। কোন চিকিৎসক কোন হাসপাতালে যাবেন তার সাপ্তাহিক শিডিউল তৈরি করা হচ্ছে। ওষুধের দোকান থেকে প্যারাসিটামল কেনা হলে ক্রেতার মোবাইল নম্বর লিখে রাখতে হবে। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য দপ্তর যোগাযোগ করে জানবে ডেঙ্গু আক্রান্ত কেউ রয়েছেন কি না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.